বহুদিন ধরেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় জোরপূর্বক ও অনৈতিকভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মোদী সরকার। শিক্ষানীতিতে পরিবর্তন আনার নাম করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ক্ষমতাও কুক্ষিগত করতে চাইছে কেন্দ্র। এছাড়া কলেজে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতার যে খসড়া ইউজিসি তৈরি করেছে তাও বাতিলের দাবি করেছে রাজ্য। এই মর্মে একটি প্রস্তাব বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভায় গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবের উপর আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার শিক্ষাব্যবস্থা কুক্ষিগত করতে চায়। তাই নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, “সম্পূর্ণভাবে দেশের বহুত্ববাদকে ধ্বংস করতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু ইউজিসি সেই সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিচ্ছে না। বাংলা ছাড়াও ছ’টি রাজ্য এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি খুঁজে বের করা, বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ, অধ্যাপক, অশিক্ষক কর্মচারীদের বেতন, ছাত্রদের পড়ার খরচ, বিভিন্ন পরিষেবা সব দেবে রাজ্য আর উপাচার্য ঠিক করবে কেন্দ্র। এটা গৈরিকীকরণ ছাড়া আর কী! নির্বাচিত সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা খর্ব করতে এই নিয়মের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। যেসব বদলের প্রস্তাব রয়েছে সেগুলি বেশ আপত্তিকর। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মূলে গিয়ে কুঠারাঘাত করতে চাইছে।”
রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এতদিন উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫ জনের সার্চ কমিটি ছিল। তাতে রাজ্যপালের একজনের প্রতিনিধি (তিনিই সভাপতি), মুখ্যমন্ত্রীর একজন প্রতিনিধি, রাজ্যের শিক্ষা সংসদ, ইউজিসির এবং বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিলের একজন করে সদস্য থাকতেন। “এখন কেন্দ্র বলছে পাঁচজন নয় তিনজনের কমিটি করতে হবে। এর মধ্যে ইউজিসির একজন, রাজ্যপালের একজন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল মেম্বার একজন থাকবেন। অর্থাৎ তিনজনের মধ্যে ২ জন কেন্দ্রের। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ওরা এভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করতে চাইছে। এরই প্রতিবাদে আমরা বিধানসভায় স্পিকারের অনুমতি নিয়ে নতুন শিক্ষানীতি পেশ করেছিলাম। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার কায়দা করতে পারছে না সেখানে ঘুরপথে ইউজিসির নিয়মের মধ্যে দিয়ে হস্তক্ষেপ করছে’’, সাফ জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী।