এ যেন উলটপুরাণ! একদা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। বর্তমানে তিনিই ৩৫ লাখের জেসিবির মালিক! বিজেপি নেতা নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ সুখেন্দু দাসের এমন বিপুল বাড়বাড়ন্তের খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল ছড়িয়েছে নন্দীগ্রামে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন নিজেদের দলের নেতা-কর্মীরাই। প্রথম থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন সুখেন্দু। সঙ্গে রাজনীতি। ২০২৩ সালে বিজেপির হয়ে পঞ্চায়েত ভোটে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হন। ভোটে জিতে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষও হন সুখেন্দু। মাত্র কয়েক বছরেই বিপুল পরিমাণে সম্পত্তি বেড়েছে তাঁর। প্রায় সাড়ে তিন লাখের রয়েল বাইক কিনেছেন। চলতি সপ্তাহে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার জেসিবিও কিনে ফেলেছেন এই নেতা। তাতেই সকলের চোখ কার্যত কপালে উঠেছে!
জানা গিয়েছে, সুখেন্দু রাজমিস্ত্রির কাজ করলেও তাঁর একাধিক অবৈধ ব্যবসা রয়েছে। বর্তমানে বালি ও মাটি ব্যবসার সঙ্গে তিনি যুক্ত। এছাড়াও রাজমিস্ত্রিদের নিয়ে নিজে একটি গ্রুপ বানিয়েছেন তিনি। এককথায়, তিনি রাজমিস্ত্রিদের ঠিকাদার। বিজেপির একাংশ তাঁকে নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির এক কর্মীর দাবি, “আমরা চাই খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ যেন বেশি করে ঝেড়ে একটা ক্রেন কিনতে পারে। তার জন্য আমরা ভারতীয় জনতা পার্টিকে অনুরোধ করব আবার আগামী দিনে যেন ওঁকে টিকিট দেয়।”

স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে বিজেপির একাধিক গ্রুপে এই নিয়ে পোস্ট চালাচালি হতে কয়েকটি গ্রুপ ছেড়ে দিয়েছেন এই নেতা। যদিও তাঁর সাফাই, “ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জেসিবি কিনেছি। তিলে তিলে পরিশ্রম করে এসব করেছি। বর্তমানে আমার একাধিক ব্যাংক লোন আছে।” তাঁকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ। “ওই নেতা একাধিক অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাতেই এভাবে ফুলেফেঁপে উঠছেন উনি। তদন্ত হওয়া উচিত ওই নেতার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে”, স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি।