উত্তরপ্রদেশে মহাকুম্ভ চলাকালীন যোগী সরকারের চরম অপদার্থতার জেরে বলি হয়েছে একের পর এক প্রাণ। কখনও পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীদের মৃত্যু হয়েছে। কখনও ঘটেছে অগ্নিকাণ্ড। কখনও আবার মহাকুম্ভের পথে ট্রেনে উঠতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে প্রাণ গিয়েছে সাধারণ মানুষের। মঙ্গলবার রাজ্য বিধনাসভায় এহেন মৃত্যুমিছিল প্রসঙ্গে যোগী সরকারকে কড়া ভাষায় একহাত নেন মমতা। মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ইতিমধ্যেই বিজেপি তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থন করেছেন শংকরাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসন্তোষ উগরে দিয়েছেন তিনি। সাফ জানিয়েছেন, প্রকৃত ব্যবস্থাপনাই নেই মহাকুম্ভে।
একটি সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “৩০০ কিলোমিটার লম্বা যানজট। এটা অব্যবস্থা নয় তো কী? পুণ্যার্থীদের জিনিসপত্র নিয়ে ২৫-৩০ কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে। পুণ্যস্নান ভেবে যেখানে ডুব দিয়েছেন পুণ্যার্থীরা সেখানে মিশেছে অপরিষ্কার জল। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই জল স্নানের যোগ্যই নয়। অথচ সেখানেই কোটি কোটি মানুষকে স্নান করতে বাধ্য করা হচ্ছে। সুতরাং উচিত ছিল জল পরিশুদ্ধ করা। কারণ, ১২ বছর অন্তর মহাকুম্ভ হয়, তাহলে কেন আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? যখন জানা গেল বহু মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন অথচ জায়গা কম। সেক্ষেত্রে বিকল্প ভাবনাচিন্তা করা প্রয়োজন ছিল। অথচ কোনও পরিকল্পনা করা হল না। ১৪৪ বছরের মহাযোগ নিয়ে অতিরঞ্জিত প্রচার করা হচ্ছে। অথচ ভিড় সামাল দেওয়া, পুণ্যার্থীদের সাহায্যে কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। তার ফলে যখন পুণ্যার্থীদের প্রাণহানি হচ্ছে তখন তা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। সেটা আরও ঘৃণ্য অপরাধ। এই পরিস্থিতিতে যদি কেউ কোনও নাম বলে তার বিরোধিতা করব কীভাবে?”
এপ্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “শংকরাচার্যও ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে মহাকুম্ভের গরিমা নষ্ট হয়নি। অব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই কথা (মৃত্যুকুম্ভ) বলেছেন।” গঙ্গাসাগর মেলাকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেছেন কুণাল। “আমরাও তো গঙ্গাসাগর করি। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী জলপথ পেরিয়ে আসেন। কই সেখানে এমন অঘটন তো ঘটে না”, জানিয়েছেন তিনি।