কলকাতা: ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পেট ফুঁড়ে বেরিয়েছিল কাঠ! প্রায় সাড়ে ৫ ঘন্টার অস্ত্রোপচারে জীবন বাঁচল উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদের বাসিন্দার। মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে এনে নজির গড়লেন এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা। শল্য বিভাগের প্রধান চিকিৎসক-অধ্যাপক বিতান চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই অস্ত্রোপচার অসাধ্য সাধন করেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় ইঞ্চি মোটা কাঠের টুকরোটির দৈর্ঘ্য ছিল পাঁচ ফুটের কাছাকাছি। যা রোগীর পেট ফুঁড়ে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে আসার পর ওই রোগীকে বাঁচাতে কঠিন অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসক-অধ্যাপক বিতান চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই অপারেশন হয়। চিকিৎসকদের ওই দলে ছিলেন শিক্ষক-চিকিৎসক সব্যসাচী বক্সি, চিকিৎসক সুস্মিতা চাকি এবং অ্যানাস্থেশিয়া, সিটিভিএস ও অস্থি বিভাগের চিকিৎসকরা।
জানা গিয়েছে, পেশায় পুলকার চালক সমরজিৎ ঘোষ হাসনাবাদের বাসিন্দা। সেদিন গাড়ি সারিয়ে ঘরে ফিরছিলেন তিনি। কিন্তু লরির ধাক্কায় প্রায় প্রাণ হারানো পর্যায়ের মুখোমুখি হন। ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে বাড়ি ফেরার পথে বসিরহাটের মালঞ্চ সেতুর উপরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে পুলিশের সাহায্যে মিনাখাঁর হাসপাতাল, পরে তাঁকে আনা হয় এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে।
রোগীর ভয়াবহ অবস্থা দেখে প্রথমে সমরজিতের শরীরের বাইরে বেরিয়ে থাকা কাঠের অংশটি কাটা হয়। তারপর পেট থেকে কাঠের বাকি অংশ বের করেন চিকিৎসকরা। প্রবল রক্তক্ষরণ থেকে শুরু করে বিরাটাকার ওই কাঠের অভিঘাতে শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি, সবদিকেই সতর্ক থাকতে হয় চিকিৎসকদের। তবে সেসব বাধা পেরিয়েই প্রায় অসাধ্য সাধন করে তাঁর জীবন বাঁচান চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের সহযোগিতায় খানিকটা বিপন্মুক্ত তিনি। এখনও হাসপাতালেই আছেন ওই রোগী। তাঁর শরীরের অবস্থা খানিকটা স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, বারবার সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে আঙুল তুললেও এহেন ঘটনা কিন্তু সত্যিই স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর বিশ্বাস রাখতে বাধ্য করে মানুষকে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের তৎপরতার কারণেই এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।