চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই ফের ‘শনির দশা’ শুরু হয়েছে বঙ্গ বিজেপিতে। লেগেই রয়েছে আভ্যন্তরীণ কোন্দল। একের পর এক কর্মীরা দল ছাড়তে শুরু করেছেন। ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে সংগঠন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে দলের অন্দরের ক্ষোভ-অসন্তুষ্টির কথা অজানা নয় কারও। এবার ফের ফুটে উঠল সেই ছবি। গত শুক্রবার রাতে করা বিজেপির বঙ্গ শাখার সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের এক ফেসবুক পোস্ট ঘিরে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই, বিজেপি নেতা দিব্যেন্দু অধিকারীর করা স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগের সুপারিশের কথা উল্লেখ করে পোস্ট করেন জগন্নাথ। রাজ্যের কোন নেতা এসএসসিতে চাকরির জন্য কত সুপারিশ করেছেন, সেই তালিকা দিয়েছিলেন তিনি। প্রথমেই ছিল দিব্যেন্দুর নাম। দিব্যেন্দু ছাড়াও প্রাক্তন আইপিএস তথা বর্তমান বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের নাম উল্লেখ করেন জগন্নাথ। দলের জাতীয় মুখপাত্রের তালিকাতেও রয়েছেন ভারতী।
উক্ত পোস্টে জগন্নাথ লেখেন, “কেউ ছাড় পাবেন না। একটু সময় লাগতে পারে!” স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা তথা বিরোধী দলনেতার ভাইকে নিশানা করায় স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গ বিজেপিতে কোন্দল শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, শুভেন্দুর পরিবারের ক্ষমতা খর্ব করতে বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠী সক্রিয়, তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল। বিতর্ক শুরু হওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের চাপে অবশেষে শনিবার বিকেলে সমাজমাধ্যম থেকে পোস্ট তুলে নেন জগন্নাথ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেখে শনিবার দুপুরে দিল্লিতে নালিশ করেন ক্ষুব্ধ শুভেন্দু, এমনই জানিয়েছে সূত্র। এরপরই দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতারা জগন্নাথকে পোস্টটি মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, আদালতে পেশ হওয়া নথিতে সিবিআই দাবি করেছে, প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে চাকরিপ্রার্থীদের নাম সুপারিশ করেছিলেন একাধিক রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী। তালিকায় রয়েছে দিব্যেন্দু, ভারতীর নাম। পাশাপাশি নাম রয়েছে আরও কয়েক জনের। স্বাভাবিকভাবেই যা তীব্র অস্বস্তিতে ফেলেছে নেতৃত্বকে।