বারবার আবেদন করেও মেলেনি সুরাহা। পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পের অধীনে তৈরি রাস্তার অবনতি অব্যাহত। টানা দু’বছর ধরে কেন্দ্রীয় সাহায্যনির্ভর এই প্রকল্পের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বাংলাকে বঞ্চিত করে রেখেছে মোদী সরকার। এমতাবস্থায় মুশকিল আসান খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নজিরবিহীনভাবে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় অর্থসাহায্যে তৈরি রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ করলেন এক হাজার কোটি টাকা। এই বিষয়ে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার জানান, “শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই একাধিক প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে। আবাস, ১০০ দিনের কাজের টাকা না দেওয়ায় বাংলার মানুষের স্বার্থে সেই টাকা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।” রাজ্যের কোষাগারের কয়েক হাজার কোটি টাকায় গ্রামীণ রাস্তাও তৈরি করা হয়েছে। এবার রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ হল।
প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা বা পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পের রাস্তা তৈরির ৬০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্র। তা সত্ত্বেও ওই প্রকল্পের রাস্তার শুরু এবং শেষে প্রধানমন্ত্রীর নামাঙ্কিত ফলক লাগানো বাধ্যতামূলক করেছে তারা। ফলে এমন প্রতিটি রাস্তাতেই মোদী সরকারের এই বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে রয়েছে। প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, রাস্তা তৈরির সময় লাগানো ফলক থেকে যায় বছরের পর বছর। কিন্তু পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় পেরিয়ে গেলে এই সমস্ত রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের কোনও নামগন্ধ নেই কেন্দ্রের এই প্রকল্পে। বাধ্য হয়েই তার দায়িত্ব নিতে হয় রাজ্য সরকারকে। টানা দু’বছর পরে, গত নভেম্বরের শেষদিকে রাজ্যকে পিএমজিএসওয়াই-৩’এর কিছু টাকা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। তারপরেও এই খাতের প্রায় ১১০০ কোটি টাকা দিল্লী আটকে রেখেছে বলেই প্রশাসনিক সূত্রের খবর। ফলে রাজ্যে আরও প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ থেমে গিয়েছে।
মোদী সরকারের এহেন বঞ্চনা ও অবহেলা থেকে বাংলার মানুষকে মুক্তি দিতেই ‘পথশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৫-২৬ সালের বাজেটে আরও দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দও করেছে নবান্ন। এছাড়া গ্রামোন্নয়ন খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে বাজেটের আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, পুরনো রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বরাদ্দ অর্থ। বাজেট নথি অনুযায়ী, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের জন্য এবার ৪৪ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে শুধুমাত্র পিএমজিএসওয়াই এবং গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের (আরআইডিএফ) টাকায় তৈরি পুরনো রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্যই এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য।