প্রয়াগরাজ: যোগী রাজ্যের মহাকুম্ভ নিয়ে একের পর এক দুর্ঘটনা কবলিত পুণ্যার্থীরা। পদপিষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যু, বারবার দুর্ঘটনায় জর্জরিত মহাকুম্ভ। পদদলিত মানুষের মৃত্যু সংখ্যা পর্যন্ত গোপন করার উঠেছে অভিযোগ। এমনকী মৃত ব্যক্তিদের মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে পর্যন্ত অস্বীকার করেছে যোগীর প্রশাসন। এহেন পরিস্থিতিতে যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি উঠল।
মহাকুম্ভ নিয়ে যোগী সরকারের অব্যবস্থা ও পরিকল্পনার অভাব। এই দায় নিয়েই এবার যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করল দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ।কেন্দ্রের সহায়তা থাকলেও সাধারণ পুণ্যার্থীদের কোনও নিরাপত্তা দিতে পারেনি যোগী সরকার। তা সত্ত্বেও যথেষ্ট পরিকল্পনার অভাব থাকায় একেবারে অব্যবস্থার চূড়ান্ত নিদর্শন গড়ে উঠেছে এই মেলায়। বিরোধী শিবির বারবার একাধিক অভিযোগ তুলেছে মহাকুম্ভ নিয়ে। এই বিষয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের সদস্য রন্তিদেব সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, এই ঘটনার দায় স্বীকার করে যোগী আদিত্যনাথকে পদত্যাগ করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলার ও অন্যান্য রাজ্যের পুণ্যার্থী ও তাঁদের পরিবারের জন্য তাঁরা আরও দাবি করেন, যাঁরা কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলেন এবং তাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়নি, অবিলম্বে উত্তরপ্রদেশ সরকার সেই শংসাপত্র দিক। মৃতের সঠিক সংখ্যা কত সেটা অনুসন্ধান করে বের করতে হবে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। পদপিষ্টের ঘটনার পর যেসব মানুষ এখনও নিখোঁজ তাঁদের সন্ধান জানানোর জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার অবিলম্বে তৎপর হোক। যাদের অপদার্থতা এবং অপরিণামদর্শিতার কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে যাদবপুরের বাসিন্দা অভিষেক রায় তাঁর মহাকুম্ভের অভিজ্ঞতা জানান। ৬ ঘণ্টার বেশি সময় দিশাহীনভাবে ঘুরেছেন। সেখানে কী পরিমাণ জলকষ্ট হয়েছে তাঁদের সেই কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আবার পরিবারের তিন মহিলাকে নিয়ে সুরজিৎ পোদ্দার গিয়েছিলেন সেখানে পুণ্য লাভের জন্য। ভিড়ের মধ্যে চোখের সামনে মা-কে পদপিষ্ট হতে দেখেছেন তিনি। দেড় ঘণ্টা কোনও প্রশাসনিক সাহায্য পাননি আহত মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। শেষে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে বিনা ময়নাতদন্তে কোনও কাগজ ছাড়াই মায়ের মৃতদেহ রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন। এ সমস্ত ঘটনাকে সামনে রেখে মহাকুম্ভকে কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত করা হয়েছে বলে উঠছে একাধিক অভিযোগ।