তৃণমূল সাংসদদের ক্রমাগত প্রশ্নবাণের সম্মুখীন হয়ে লোকসভায় মুখ পুড়ল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের। মঙ্গলবার বাজেট বিতর্কের
জবাবি ভাষণ দেওয়ার জন্য নির্মলার বক্তব্যের শুরুতেই তাঁর বিরুদ্ধে তুমুল ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল সাংসদরা। প্রশ্ন তোলেন, কেন বাংলা বিরোধী বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী? এর
কোনও সদুত্তর দিতে পারলেন না নির্মলা। কেন বাংলাকে বঞ্চনা করা হয়েছে, কেন মনরেগা,
আবাস যোজনা-সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পে
বাংলার ন্যায্য প্রাপ্য বিরাট অঙ্কের টাকা বকেয়া
রাখা হয়েছে, সেই প্রশ্নই ছুঁড়ে দেন মহুয়া মৈত্র, প্রতিমা মণ্ডল, জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ-সহ একঝাঁক তৃণমূল সাংসদ। এমতাবস্থায় কোনও যুতসই অজুহাত না পেয়ে ফের মিথ্যাচারের পথেই হাঁটতে হল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে।
এদিন লোকসভায় দাঁড়িয়েই নির্মলা দাবি করেন, মনরেগা প্রকল্পের আওতায় বাংলায় নাকি ২০ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড পাওয়া গিয়েছে! এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হন তৃণমূল সাংসদরা। গত বছরের ৩০ জুলাই লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, মালা রায় এবং দীপক অধিকারীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসোয়ান বাংলায় ভুয়ো জবকার্ড নিয়ে কোনও তথ্য দেননি। তাহলে এদিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন কীসের ভিত্তিতে মনরেগা প্রকল্পে বাংলায় ২০ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ডের কথা বলেন? প্রশ্ন শুনে থতমত হয়ে পড়েন অর্থমন্ত্রী। প্রসঙ্গান্তরে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
এরপরই পাল্টা আক্রমণ শানান লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, গত তিন বছরে বাংলা থেকে কর বাবদ কত টাকা আয় করেছে মোদী সরকার। একইসঙ্গে এবারের বাজেটে বাংলার জন্য কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তাও জানতে চান। এই দুটি প্রশ্নেই কোনও উত্তর দিতে পারেননি নির্মলা। তাঁর এহেন মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদে মুখর হয়েছে তৃণমূল। দেশের গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ পীঠস্থানে দাঁড়িয়ে মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী যেভাবে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন, তা প্রকৃতপক্ষে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, এমনই জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় বাজেট রেলে বাংলার জন্য যৎসামান্য বরাদ্দ যে স্রেফ বাংলাবাসীর চোখে ধুলো দেওয়ারই নামান্তর, তা অর্থমন্ত্রীর ভাষণেই জলের মতো পরিষ্কার।