তৃতীয়বার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবার পর পর থেকেই বাংলাকে আরও শিল্পবান্ধব করে তোলার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতোই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। শিল্পক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানই যার মূল লক্ষ্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদর্শী পরিকল্পনাতেই দেশের অন্যতম শিল্পবান্ধব রাজ্য হয়ে উঠছে বাংলা। লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে চলছে রাজ্যে। সম্প্রতি বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। এই বিপুল বিনিয়োগকে শিল্পে রূপান্তরিত করতে মুখ্যমন্ত্রী গড়েছেন সিনার্জি কমিটি। বাংলায় শিল্প প্রসারের সেই বার্তাই সমাজমাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে তৃণমূলের তরফে।
মা-মাটি-মানুষের সরকারের আমলে বাংলায় কোনও শ্রমদিবসও নষ্ট হয় না। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ধর্মঘটমুক্ত পরিবেশ বাণিজ্যের অগ্রগতিকে আরও উদ্বুদ্ধ করেছে। অষ্টম বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ধর্মঘট মুক্ত পরিবেশের কথা তুলে ধরেন। ভারতীয় অর্থনীতিতে শিল্পের গুরুত্ব বুঝে এবং মুখ্যমন্ত্রীর দূরদর্শী পরিকল্পনায় আস্থা রেখেই এবার বাণিজ্য সম্মেলনে বিপুল বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। আর তা রাজ্যকে কর্মসংস্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে দিয়েছে অনেকটা। উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যায় বীরভূমের দেউচা-পাঁচামির কথা। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তথা দেশের বৃহত্তম এই কয়লা খনিতে খননকাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সেখানে এক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এবার ৪০টি দেশের ২০০ বেশি প্রতিনিধি উপস্থিত হয়েছিলেন বাণিজ্য সম্মেলনে। তাঁরা একের পর এক লগ্নি প্রস্তাব দিয়ে গিয়েছেন বাংলার জন্য। রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি বাংলায় বিনিয়োগ দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছেন। সেইমতো তিনি ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবেন বাংলার শিল্পে। জিও স্টোর, এআই সেন্টার, গ্রিন এনার্জি ও কেবল ল্যান্ডিংয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে।
এরই পাশাপাশি, জেএসডব্লু গ্রুপ ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। সেই টাকায় দুটি ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হবে। অম্বুজা-নেউটিয়া গ্রুপ আগামী পাঁচ বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। আরপি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপ ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে শক্তি, পরিকাঠামো ও শিক্ষা খাতে। এছাড়াও অর্থনৈতিক করিডর ও মহিলাদের ক্ষমতায়ন বাংলাকে দ্রুত বিনিয়োগের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আইটি ক্ষেত্র থেকে শুরু করে সেমিকন্ডাক্টর, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রায় দুই লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। চর্মশিল্পে ৪ লক্ষ এবং বিভিন্ন শিল্পপার্কে লক্ষাধিক কর্মসংস্থান হবে। ১ কোটি ৩৬ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে এমএসএমইতে।