কলকাতা: শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের বাজেট পেশের পরেই ক্ষুব্ধ তৃণমূল। এবার বাজেট নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের। গরিবের জন্য বাজেট কি করেছে! সেই প্রশ্ন তুলেই তথ্যপ্রমাণ সহ ব্যাখ্যা দিলেন অমিত মিত্র। বিশ্লেষকদের কথায় এই বাজেট কেন্দ্রের জনবিরোধী ষড়যন্ত্রকেও প্রকাশ্যে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থ উপদেষ্টা।
২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের এই বাজেট সাধারণের জন্য আসলে কতটা লাভজনক! তা নিয়েই বিশ্লেষণ করতে গিয়ে রাজ্যের অর্থ উপদেষ্টা অমিত মিত্র কেন্দ্রের ঘোষিত ছাড়ের প্রসঙ্গ আনেন। সামাজিক প্রকল্পে ১৬ শতাংশ ছাড়, হাউজিং-এর ক্ষেত্রে ছাড় ৪.৩৮ শতাংশ, তফসিলি জাতি-উপজাতি ও কল্যাণে ছাড় ৩ শতাংশেরও বেশি। এমনকি খাদ্যের ভর্তুকিতেও ছাড় ১ শতাংশ। সবেতে ছাড় কিন্তু যুবসমাজ, মহিলা এবং কৃষকরা ব্রাত্য কেন? প্রশ্ন মিত্রের।
দেশের বেকার সমস্যা বৃহত্তর আকার নিয়েছে, যুবদের মধ্যে বেকার প্রায় ৪৬ শতাংশ। এর মধ্যে শিক্ষিত বেকার অর্থাৎ স্নাতক বেকার প্রায় ৩০ শতাংশ। CMIE-এর তথ্য অনুসারে, অক্টোবর এবং ডিসেম্বরের মধ্যে বেকারের সংখ্যা ছিল ৩৭ মিলিয়ন। এই তথ্য সামনে এনেছেন অমিত মিত্র।
বিমা সেক্টরে বিদেশি বিনিয়োগের সীমা ৭৪% থেকে ১০০% করা হয়েছে। আবার বিদেশি বিনিয়োগে ১০০ শতাংশ ইক্যুইটি কিন্তু সাধারণ মানুষের বিমার ক্ষেত্রে জিএসটি ১৮ শতাংশ অর্থাৎ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এই পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে এনে অমিত মিত্র প্রশ্ন তুলে বলেন, তবে বিমায় বিদেশি বিনিয়োগের ১০০ শতাংশ সুযোগ মিললেও কেন সাধারণের জন্য স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি কমানো হল না?
এমনকি ম্যানুফ্যাকচারিং জিডিপির ১৫ শতাংশ। কিন্তু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ২৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন কোথায় দাঁড়িয়ে? মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দিশা কোথায় দেখাল এই বাজেট? এমনই প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছেন মিত্র।
তৃতীয় দফার মোদী সরকারের এই বাজেটে একাধিক ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েও গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিকে উপেক্ষিতই রাখা হয়েছে। বাজেটের এই দিশা ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে কটাক্ষ করেছেন অমিত মিত্র। তথ্য পরিসংখ্যান সমেত তিনি স্পষ্টত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, সামাজিক প্রকল্প, খাদ্যে ভর্তুকি কমানো মূলত কতটা জনস্বার্থ বিরোধী! শুধু তাই নয়, সমস্ত তথ্যকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় বাজেটকে মূলত ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ বলে বর্ণনা দিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা অর্থ উপদেষ্টা অমিত মিত্র।