নরেন্দ্র মোদীর জমানায় দেশজুড়ে বারবার ফুটে উঠেছে কর্মসংস্থানের বেহাল চিত্র। ক্রমশ প্রকট হয়েছে বেকারত্ব। বহুদিন ধরেই মূল্যবৃদ্ধির প্রকোপে জর্জরিত সাধারণ মানুষ দিশেহারা। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমছে। চাহিদা কমছে বাজারে। ফলে মুখ থুবড়ে পড়ছে উৎপাদন। আর তার প্রভাব এসে পড়েছে কর্মসংস্থানেও। বেকারত্বের জ্বালা বেড়েই চলেছে। বিগত ১১ বছরে কোনও সমাধান সূত্রই দিতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী মোদী। আসন্ন বাজেটের মুখে খোদ কেন্দ্রের তথ্যই তুলে ধরেছে দেশের কর্মসংস্থানের তথৈবচ প্রতিচ্ছবি। তথ্য বলছে, উৎপাদন ক্ষেত্রের চাকরিতে ব্যাপক ধস নেমেছে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে। কর্মসংস্থান গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০১০-১১ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে কর্মসংস্থান। কাজ হারিয়েছেন অন্তত ১২ লক্ষ মানুষ। দেশের আনইনকর্পোরেটেড সেক্টরের বা অনথিভুক্ত ক্ষেত্রে এই করুণ চিত্রই উঠে এসেছে কেন্দ্রের রিপোর্টে। জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের দেওয়া এই তথ্যে স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে।
কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি খাতায় নথিভুক্ত নয় এই সমস্ত সংস্থাগুলি। সংস্থাগুলি মূলত ব্যক্তি মালিকানাধীন কিংবা অংশীদারিত্বে চলে। মোদীর আমলে এ ধরনের সংস্থায় কর্মী সংখ্যা প্রভূত হারে কমেছে। সম্প্রতি বার্ষিক সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এনএসও। সেই তথ্যেই দেখা গিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে এই ক্ষেত্রে ৩ কোটি ৩৭ লক্ষ মানুষ চাকরি করছেন। ২০১০-১১ অর্থবর্ষে মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সেখানে চাকরি করতেন ৩ কোটি ৪৯ লক্ষ মানুষ। বিগত ১৪ বছরে কর্মসংস্থান কমে গিয়েছে ১২ লক্ষ। ১৪ বছরে দেশে অনথিভুক্ত সংস্থা ৪২ লক্ষ বাড়ার পরও কেন এত মানুষ কাজ হারালেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ২০১০-১১ অর্থবর্ষে ১ কোটি ৭২ লক্ষ ছিল অনথিভুক্ত সংস্থার সংখ্যা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ১৪ লক্ষ। কিন্তু কর্মসংস্থান বাড়েনি, বরং কমেছে। মানুষের রুটি-রুজির সংস্থান বিপন্ন। মোদী সরকারের অদূরদর্শিতা ও নীতিগত ব্যর্থতার কারণেই এই হাল, এমনই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতের নোট বাতিল, জিএসটি চালু, তারপর কোভিড পর্বে অপরিকল্পিত লকডাউনই এর জন্য দায়ী। মোদী সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণে লাটে উঠেছে বহু সংস্থা। নতুন নতুন সংস্থা গড়ে উঠলেও তা দাঁড়াতে পারেনি মাথা তুলে। তার ফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। বেকারত্বের হতাশা ঘিরে ধরেছে তাদের।
