মঙ্গলবার সেন্ট্রাল পার্ক প্রাঙ্গণে ৪৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশা প্রকাশ করেলেন, এবছর বইমেলায় বইপ্রেমীর সংখ্যা কোটিতে পৌঁছবে। গত বছর এসেছিলেন ২৭ লক্ষ মানুষ। প্রায় ৩০ কোটি টাকার কেনাবেচা হয়েছে। এবার তা আরও বাড়বে বলেই আশাবাদী মমতা। এদিন বিকেলে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে স্থায়ী বইমেলা প্রাঙ্গণে ঝলমলে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বই-পার্বণের সূচনা হল। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, বইমেলা “আমাদের প্রাণের উৎসস্থল থেকে উৎসারিত আলো। বই ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। বই আমাদের ‘ফ্রেন্ড-ফিলোজফার-গাইড’।” এবারের বইমেলায় লেখক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন তিনটি বই পাওয়া যাবে। সেগুলি, ‘লিপিবদ্ধ কিছু কাজ’, ‘বাংলায় নির্বাচন ও আমরা’, ‘স্যালুট টু’ (ইংরেজি বই)। মঞ্চে সাহিত্যিক আবুল বাশারকে তাঁর সারা জীবনের কাজের সৃষ্টি এবং স্বীকৃতি হিসেবে জীবনকৃতী সম্মান দেওয়া হল।
মঙ্গলবার বইমেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছেই মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে যান রাজ্য পুলিশের স্টলে। সেটি উদ্বোধনের পর কলকাতা পুলিশের স্টল উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে যান দলীয় মুখপত্র জাগোবাংলার স্টলে। এবারের এই স্টলের থিম তৈরি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। মঞ্চে এ-প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটা মা-মাটি-মানুষের থিম। সঙ্গে মাটির বাড়ি। তার সঙ্গে কুলঙ্গি। যেখানে বই রাখা থাকবে। যেমনটা আগে থাকত। একটা অর্জুন গাছও রয়েছে।” ৪৮তম বইমেলার থিম কান্ট্রি হল জার্মানি। এদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সে-দেশের অ্যাম্বাসাডর ড. ফিলিপ অ্যাকরমান-সহ বিশিষ্ট অতিথিরা। গিল্ডকর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, সুধাংশু দে মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন আবুল বাশারকে সম্মান তুলে দিতে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাশার সাহেব তাঁর অ্যাকাউন্টে আজ দু’লক্ষ টাকা বাড়ালেন। কারণ এই ধরনের পুরস্কারের সঙ্গে আর্থিক সম্মাননা দেওয়াটাই রীতি।” জার্মান অ্যাম্বাসাডর বললেন, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার থিম কান্ট্রি হিসেবে জার্মানিকে রাখায় গর্বিত এবং আপ্লুত তিনি। পাশাপাশি এই মেলার শ্রীবৃদ্ধি কামনা করলেন। নিজের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী সম্মান জানিয়েছেন জার্মানবাসীদের। তিনি বলেন, “জার্মানির সঙ্গে আমাদের দেশের সুসম্পর্ক বহুকালের। জার্মানির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নেতাজী সুভাষচ্ন্দ্র বসুর স্মৃতি। শুধু তাই নয়, জার্মানিকে আমরা চিনি ফুটবলের দেশ হিসেবে। আর্জেন্টিনাও আমাদের কাছে খুবই আন্তরিক ফুটবলের দেশ। তাদের রং আমাদের খুবই পছন্দের। যদিও সব রংই ভাল, সব রংই সমান। আমরা বাংলার মানুষ ফুটবল ভালবাসি। আমরা জার্মানিকেও ভালবাসি। আর্জেন্টিনাকেও ভালবাসি।” এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ডিজি রাজীব কুমার, সিপি মনোজ ভার্মা, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুজিত বসু, ইন্দ্রনীল সেন, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত, সাংসদ মালা রায়, দোলা সেন-সহ অন্যান্য বিশিষ্টজন।
