Kolkata Police সাফল্যের অনন্য নজির গড়ল রাজ্য পুলিশ। এক মাসের মধ্যেই। দুটি ভিন্ন ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ফাঁসির সাজা হল অভিযুক্তদের। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে এমন নজির আর কোনও রাজ্যে নেই। রাজ্য পুলিশের টিম তদন্ত করে তথ্যপ্রমাণ সহযোগে দ্রুত চার্জশিট দিয়েছে। ফলে জয়নগরের ঘটনায় ৬২ দিনে এবং ফরাক্কার ক্ষেত্রে ৬১ দিনের মধ্যে ফাঁসির শাস্তি হল অপরাধীদের। কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থারও এই কৃতিত্ব নেই। শুক্রবার ফরাক্কায় নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত দীনবন্ধু হালদারকে ফাঁসি ও শুভজিৎ হালদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে আদালত। ঘটনার ৬১ দিনের মাথায় সাজা হল দু’জনের। ২১ দিনে জমা পড়েছিল চার্জশিট। জঙ্গিপুরের অতিরিক্ত জেলা এবং সেশন জজ অমিতাভ মুখোপাধ্যায় এই আদেশ দিয়েছেন। এই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুন, গণধর্ষণ ও তথ্য-প্রমাণ লোপাট, অপহরণ এবং পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারায় আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সফল হন সরকার পক্ষের আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার এই আদালত দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এর আগে জয়নগরের ঘটনায় ৬২ দিনে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল আদালত। দু’ক্ষেত্রেই রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী দলের প্রশংসা প্রাপ্য। তাদের তৎপরতা, সঠিক তদন্ত, তথ্যপ্রমাণ এবং সঠিক সময়ে চার্জশিট জমা দেওয়ার কারণেই আদালত শাস্তি দিতে পেরেছে অভিযুক্তদের। এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে তদন্তকারী দলের প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে সময় বেঁধে দিয়ে দ্রুত সাজার জন্য ফের সওয়াল করেছেন তিনি।
Read More: মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সরকারি পরিকাঠামোয় নজরদারি – নয়া পদক্ষেপ নবান্নের
এপ্রসঙ্গে উক্ত মামলার সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, বৃহস্পতিবার বিচারক অভিযুক্তদের ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ৬৫, ৬৬, ১৩৭, ১৪০, ১০৩, ২৩৮ এবং পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারায় দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। শুক্রবার এই হত্যাকাণ্ডকে বিরলের মধ্যে বিরলতম আখ্যা দিয়েছেন বিচারক। গত ১৩ অক্টোবর দাদুর বাড়ির সামনে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে খেলা করার সময় হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায় বছর দশেকের ওই নাবালিকা। এরপর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে দীনবন্ধু হালদার নামে এক মাছ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ওই নাবালিকার বস্তাবন্দি মৃতদেহ। পরে পুলিশ দীনবন্ধুকে গ্রেফতার করে। ধৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, শুভজিৎ হালদার নামে আরও এক ব্যক্তি এই খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছিল। ১৯ অক্টোবর তাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশি তদন্ত এবং ওই নাবালিকার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে জানা যায়, সাজাপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তি ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা ছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক অত্যাচার করেছিল। মৃতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন এবং মাথায় গুরুতর আঘাতের উল্লেখ ছিল ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। এই মামলাটিকে ‘ফুল প্রুফ’ করার জন্য পুলিশের তরফ থেকে একাধিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার পাশাপাশি, ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির ‘টুল কিট’ ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, রাজ্যে এই প্রথম ‘ড্রোন ম্যাপিং’ করা হয় এই মামলায়। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায়ের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী দল ২১ দিনের মাথায় এই মামলার চার্জশিট দিয়েছিল। ৬১ দিনের মাথায় ওই নাবালিকার পরিবার সুবিচার পেল।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1867870295278886960?s=19