Bengal তৃতীয়বার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই রাজ্যকে আরও শিল্পবান্ধব করে তোলার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতোই নানান পদক্ষেপ নিয়েছে তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার। শিল্প ও বাণিজ্যে প্রভূত উন্নতি করেছে বাংলা। ২০২৫-এর ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি অষ্টম বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট শুরুর আগে ভিডিও প্রকাশ করে তা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিল তৃণমূল। তথ্য-পরিসংখ্যানই বলছে, বাংলা শিল্পসমৃদ্ধ। একটি উদীয়মান ব্যবসাকেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে এই রাজ্য। বর্তমানে এই রাজ্যে ১.৪৫ লক্ষ সক্রিয় কোম্পানি রয়েছে, যা দেশের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ। ১০ মিলিয়ন বা ১ কোটিরও বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, স্টেট অফ গভর্নেন্স স্কচ রিপোর্ট ২০২১ অনুয়ায়ী ইজ অফ ডুয়িং বিজনেসে এক নম্বরে রয়েছে বাংলা। বাংলা এখন বিশ্ব জুড়ে বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্বের দরবারে বাংলা নিজেকে উন্নত বাণিজ্যের রাজ্য বলে পরিগণিত হচ্ছে। ২০১১ সালের পর থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ হয়েছে বাংলা। বিশ্বের বৃহত্তম তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা উইপ্রো, কগনিজেন্ট, ইনফোসিস রাজ্যে কাজ শুরু করেছে। সেই সঙ্গে বাংলা ভারতের পরবর্তী তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পের রাজধানী হিসেবে উন্মোচিত হচ্ছে। তৃণমূল তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানিয়েছে, রাজ্যে এক হাজার সফ্টওয়্যার কোম্পানি চলছে। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ২.৬ লক্ষ মানুষের। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতির ছাপ ফেলেছে বাংলা। যার ফলে তা তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পে সম্ভাবনাময় রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত।
Read More: ‘বিশ্বের আইকনিক জায়গা হতে চলেছে দিঘার জগন্নাথধাম’ – জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ভারতের সিমেন্ট হাব বলে পরিচিত লাভ করেছে বাংলা। বাংলাতে রয়েছে ৯টি প্রধান সিমেন্ট কোম্পানি। সম্প্রতি শ্রী সিমেন্ট বিশাল কারখানা করেছে। সেখানে উৎপাদনও শুরু হয়েছে, ইতিমধ্যে বাজার দখল করে নিয়েছে এই সিমেন্ট কোম্পানি। আইটিসি, বার্জার পেন্টস, টিটাগড় রেল সিস্টেম এবং শ্রী সিমেন্টের মতো বড় কর্পোরেশনের উপস্থিতি বাংলার বিকশিত শিল্প-বৈচিত্র্যকেই স্পষ্ট করে বলে জানিয়েছে তৃণমূল। এর পাশাপাশি বাংলায় হ্যান্ডলুম শিল্পের সঙ্গে যুক্ত আছেন ৫.৪ লক্ষ মানুষ। যা এই শিল্পে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্যে পরিণত করেছে বাংলাকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুযোগ্য পরিচালনায় বাংলা আক্ষরিক অর্থেই বাণিজ্যনগরী হয়ে উঠছে। সম্প্রতি শিবির করে ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের ৪২৬ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। উদ্যোগপতির কাছে পৌঁছোতে ২,৪০৭টি শিবির করা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনে ১,৬০৭ একর জুড়ে ৩৮টি প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। বড় ও মাঝারি শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও ছোট উদ্যোগপতিদের সুবিধার্থে সর্বদা কাজ করে চলেছে বাংলার সরকার। বাংলায় রয়েছে ৮৮.৬৭ লক্ষ এমএসএমই, যা দেশের ১৪ শতাংশ। ১.৩৬ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এই ক্ষেত্রে। এর মধ্যে ২৯ লক্ষ ১ হাজার ৩২৪টি মহিলা পরিচালিত, যা দেশের মধ্যে শীর্ষে। ভারতের মোট সংখ্যার ২৩.৪ শতাংশ। এই ক্ষেত্রে ঋণ প্রদানের পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা বেড়েছে। শতাংশের বিচারে এই বৃদ্ধি বছরে ২৫.৯৬ শতাংশ। ১২ বছরে মোট ৬.১৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে শিল্প ক্লাস্টারের সংখ্যা ১২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭০০টি এমএসএমই গড়ে উঠেছে রাজ্যে। গত বছরের তুলনায় তা দ্বিগুণ। মুখ্যমন্ত্রী দূরদর্শিতায় টেক পাওয়ার হাউসে পরিণত হচ্ছে বঙ্গ। সিলিকন ভ্যালিতে ২,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসছে। জাপানের বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি সংস্থা ‘এনটিটি’ সেই বিনিয়োগ নিয়ে আসছে। এছাড়াও আমেরিকা ও ইংল্যান্ড থেকেও বিনিয়োগ আসছে বাংলায়। অদূর ভবিষ্যতে বাংলা বিদেশি বিনিয়োগে পরিপুষ্ট হয়ে কর্মসংস্থানে জোয়ার আনবে বলেই আশাবাদী রাজ্য।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1867468791560777809?s=19