ডিভিসির আচমকা মাত্রাতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে বন্যা-পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল বাংলায়। ইচ্ছাকৃত এভাবে বাংলাকে বিপদে ফেলার বিষয়টিকে উল্লেখ করে কড়া নিন্দায় সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে বেশ কয়েকটি জেলায় কৃষকদের প্রচুর পরিমাণ ক্ষতি হয়েছিল। এরপর ঘূর্ণিঝড় দানার প্রকোপে ক্ষতির মুখে পড়ে রাজ্যের একাধিক জেলা। ঝড় খুব বেশি না হলেও এক নাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ার ফলে কৃষকদের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে সরকারের তরফে। সেই ক্ষতির পরিমাণ কতটা, তারই খতিয়ান দিলেন রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, জল ছাড়ার ফলে এবং দানার প্রভাবে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ৯ লক্ষের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কোন জেলায় কতজন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত সেই তথ্য দিয়েছেন তিনি। দেখা যাচ্ছে কয়েকটি জেলায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ১ লক্ষের বেশি কৃষক।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী হুগলিতে ৭৫ হাজার ২৪৫ জন, ঝাড়গ্রামে ২৯ হাজার ৯৩৪ জন, বাঁকুড়ায় ২ লক্ষ ১০ হাজার ৫৫৯ জন, হাওড়ায় ১ হাজার ৭৯৫ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ১ লক্ষ ২৩ হাজার জন, পূর্ব বর্ধমানে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪৫০ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ১৫ হাজার ৯৬০ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৮৫ হাজার ৬২৫ জন, বীরভূম ২৬ হাজার ৯৭৪ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মোট সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৯ লক্ষ ৩ হাজার ৫৪৩ জন। যদিও এই সংখ্যাটি চূড়ান্ত নয় বলেও জানান তিনি। রাজ্যের এই মুহূর্তের পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে মঙ্গলবার একটি বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান মু্খ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষতির টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও কৃষক যেন বঞ্চিত না হন সেই দিকে নজর দিতে হবে। রাজ্য সরকার কেন্দ্রের মতো কোনও প্রকল্প করে না। তাই মানবিক দিক বজায় রেখে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছেন ৬১ লক্ষ ৫৫ হাজার কৃষক।