Narendra Modi নরেন্দ্র মোদীর আমলে বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হলেও মূল্যবৃদ্ধির কোপ থেকে রেহাই পায়নি দেশের আমজনতা। বারবার পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খাদ্যপণ্য, জ্বালানির দাম। করোনাকাল থেকে পরিস্থিতি আরও করুণ। কার্যত ঘুম উড়েছে জনসাধারণের। অথচ এতে বিলকুল ভ্রূক্ষেপ নেই প্রধানমন্ত্রীর! স্বদেশের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তিনি আগাগোড়া নীরব। অথচ রাশিয়ায় কাজানে ব্রিকস সম্মেলনে সেই মোদীর মুখেই শোনা গেল মূল্যবৃদ্ধি রোধের উপায়-সংক্রান্ত বাগাড়ম্বর! বুধবার সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলায় সব দেশকে একজোট হতে হবে। সব দেশ সম্মিলিতভাবে খাদ্য নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করুক। মূল্যবৃদ্ধিকে পরাস্ত করতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, বিদ্যুৎ সুরক্ষা এবং জলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা দরকার। ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, চীন এবং সাউথ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত বিশ্বগোষ্ঠী ব্রিকসের সম্মেলন চলছে রাশিয়ার কাজান প্রদেশে। সেই সম্মেলনে এদিন মোদির প্রস্তাব, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার দরকার বিশ্বস্তরে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ, মাল্টিল্যাটারাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কগুলি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কার করতে হবে। ব্রিকস সম্মেলন থেকেই এই শপথ ও প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার। অথচ দেশে এমন কথা শুধু মোদি কেন, তাঁর সরকারের কারও মুখে শোনা যায় না। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস তো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মূল্যবৃদ্ধি কমার এখনই কোনও সম্ভাবনা নেই। মাঝেমধ্যেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বিমাসিক নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠক হয়। আর নিয়ম করে কমিটির সদস্যরা রেপো রেট একই রেখে দিয়ে জানিয়ে দেন, মূল্যবৃদ্ধি না কমলে ঋণ বাবদ সুদের হার এরকমই চড়া থাকবে।
Read More: দেশের পরিবেশ আইন আদতে দন্তহীন! – দিল্লীর বায়ুদূষণ নিয়ে ‘সুপ্রিম’ ভর্ৎসনার মুখে মোদী সরকার
অর্থাৎ, একদিকে মূল্যবৃদ্ধি এবং অন্যদিকে উচ্চ সুদের হারে ইএমআই, জোড়া ফলায় বিদ্ধ জনতা। ব্যয় বেশি, আয় কম। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য এই পরিস্থিতিতেও চাঁদে চন্দ্রযান পাঠানো নিয়ে আত্মপ্রচারে ব্যস্ত। জি-২০ সম্মেলনের কৃতিত্ব দাবি করেছেন। রামমন্দির নিয়ে লোকসভার ভোটে টানা প্রচার করে গিয়েছেন। মহিলা সংরক্ষণ আইনের সাফল্যগাথা গেয়েছেন। ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশনের প্রস্তুতি চরমে তুলেছেন। বিরোধীদের জেলে পাঠিয়েছেন। নতুন কাশ্মীরের মসিহাও হয়েছেন। তাঁর ভাষণে, বিবৃতিতে, ঘোষণায়, প্রতিশ্রুতিতে এবং সরকারি সিদ্ধান্তে শুধুমাত্র একটি বিষয় অনুপস্থিত। তা হল নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। চলতি বছরে দু’বার বাজেট পেশ করেছেন তাঁর অর্থমন্ত্রী। অথচ মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে সেই দুই বাজেটই নিশ্চুপ! নিজের দেশ যেখানে মূল্যবৃদ্ধিতে পর্যুদস্ত, দেশের নাম বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে যেখানে লজ্জাজনক স্থানে (১০৫তম), সেখানে বিদেশে গিয়ে মোদী দাওয়াই দিলেন বিশ্বক্ষুধার মোকাবিলারও! কয়েকদিন আগেই জানা গিয়েছে ভারতের কৃষকদের প্রবল উদ্বেগের কথা। কারণ, ডিএপি সারের সরবরাহ কমে যাচ্ছে। ব্যয় বাড়ছে রবিচাষের। সারের দাম আরও বাড়বে। অর্থাৎ শীতকালের সব্জির সরবরাহ কমবে অথবা দাম বাড়বে অস্বাভাবিকভাবে। অর্থাৎ, আরও সংকটের মুখে পড়তে পারে দেশবাসী।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1849428644919472134