সম্প্রতিই কোচবিহারে বিজেপি সাংসদ অনন্ত মহারাজের হাতে নিগৃহীত হয়েছেন সন্ন্যাসী স্বামী বিজ্ঞানানন্দ মহারাজ। যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। এবার সেই সন্ন্যাসীর সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর মাধ্যমে ফোনে কথা বলে সন্ন্যাসীকে আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আপনার ওপরে এমন হয়েছে জেনে খারাপ লেগেছে। কোনও অসুবিধা হলে উদয়ন গুহ ও কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ বসুনিয়াকে জানাবেন।” এদিন দুপুরে সিতাইয়ের সালটিবাড়ি গ্রামের ওই আশ্রমে পৌঁছন উদয়ন গুহ। আশ্রমের সন্ন্যাসীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন৷ মন্ত্রীর ফোন থেকেই মুখ্যমন্ত্রী সন্ন্যাসীকে বলেন, “আপনি চিন্তা করবেন না। যদি কখনও কোচবিহার যাই অবশ্যই আপনার সঙ্গে দেখা হবে।” উদয়ন গুহ বলেন, আশ্রমের সামনে রাস্তা তৈরির ব্যাপারে উদ্যোগ নেবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। তৃণমূল সাংসদ জগদীশ বর্মা বসুনিয়া বলেন, আশ্রম তৈরির প্রথম দিন থেকে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। আগামী দিনে সবরকম ভাবে পাশে থাকবেন। এদিন আশ্রমে মন্ত্রী উদয়ন গুহ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিতাই ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঙ্গীতা রায় বসুনিয়া-সহ তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, বিজয়া দশমীর সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট ওই আশ্রমে ঢুকে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ ওরফে নগেন রায়ের বিরুদ্ধে ওই আশ্রমের সন্ন্যাসী স্বামী বিজ্ঞানানন্দ মহারাজকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এমনকী মারধরের অভিযোগ ওঠে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় সারা জেলা জুড়ে। দুই সন্ন্যাসী অপমানিত হয়ে আশ্রম ছেড়ে চিরতরে চলে যাবেন বলে রওনা হলে তাদের বাধা দিয়ে আবাসিক ও গ্রামবাসীরা পথ অবরোধ করেন। বিজেপি সাংসদ অনন্ত মহারাজকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হন সকলে৷ আশ্রম কর্তৃপক্ষ সিতাই থানায় অনন্ত মহারাজের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে৷ এরপরেই এই আশ্রমে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। সেই আশ্রমের মহারাজের পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। এরপর ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আবারও সেই আশ্রমে যান এবং সেখানে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সন্ন্যাসীর কথা বলিয়ে দেন তিনি। জানা গিয়েছে, আশ্রমের পুজোর প্রসাদের জন্য সামগ্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদয়ন গুহের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন। সেই সামগ্রী দিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার আশ্রমে প্রসাদ বিতরণ হবে ভক্তদের মধ্যে।