ফিরে এল করমণ্ডলের স্মৃতি। ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী রইল চেন্নাই। চেন্নাইয়ের কাছে তিরুভাল্লুর জেলার কাভারাইপ্পেত্তাই রেল স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হল মাইসুরু-দ্বারভাঙা বাগমতি এক্সপ্রেসের ১২টি বগি। ৭৫ কিলোমিটার বেগে ছুটে এই ট্রেন শুক্রবার রাতে সজোরে গিয়ে ধাক্কা মারে মালগাড়িতে। মেন লাইনের বদলে ট্রেনটি লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে। আর তার জেরেই ঘটে বিপত্তি। ঘটনায় আহত হন একাধিক যাত্রী। আগুন ধরে যায় ট্রেনের পাওয়ার কারে ও পার্সেল ভ্যানে। বালেশ্বরেও একই ভাবে লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতে ছিলেন ১ হাজার ৩৬০ জন যাত্রী। তিরুভাল্লুরের জেলাশাসক ডঃ টি প্রভুশঙ্কর জানিয়েছেন, ঘটনায় ১৯ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চার জনের অবস্থা সংকটজনক। বর্তমানে নিকটবর্তী হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। তবে কোনও প্রাণহানি ঘটেনি। মধ্যরাত পর্যন্ত দুর্ঘটনাস্থলে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করে সরকারি বাসে এমজিআর চেন্নাই সেন্ট্রাল রেল স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রত্যেককে খাবার ও জল দেওয়া হয়। ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে ধাতস্থ হওয়ার পর প্রত্যেককেই গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
এপ্রসঙ্গে দক্ষিণ রেলের জেনারেল ম্যানেজার আর এন সিং বলেন, গুডুর হয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে যাচ্ছিল ট্রেনটি। লুপ লাইনে গুডুরমুখী একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির জন্য সঠিক সিগন্যাল দেওয়া হলেও সেটি মেইন লাইনের বদলে লুপ লাইনে ঢুকে যায়। পিছন থেকে গিয়ে সজোরে তা ধাক্কা মারে মালগাড়িটিতে। ফলে ইঞ্জিন-সহ একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। রেল সূত্রে খবর, লুপ লাইনে ঢোকার মুহূর্তে ট্রেনের কর্মীরা ঝাঁকুনি অনুভব করেন। পাইলট এবং লোকো পাইলট সুস্থ রয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণে একাধিক ট্রেনের রুট ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। কিছু ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন হয়। একাধিক ট্রেন বাতিলও করা হয়। যার জেরে বিপাকে পড়েন অসংখ্য যাত্রী। শনিবার নির্ধারিত সময়ে ছাড়ার ১৮টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে বলে খবরএই দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ এবং উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল। ঘটনায় উদ্বিগ্ন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। “দ্রুত উদ্ধারকাজ চালিয়েছে প্রশাসন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাকিদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। তাঁদের সকলকে খাবার ও জল দেওয়া হয়। দমকল বিভাগের তরফে লাইচ্যুত বগিগুলি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। সমস্ত বিষয়ের উপর নজর রাখছি”, জানিয়েছেন তিনি। দেশজুড়ে বারবার এমন ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে মোদীর রেলমন্ত্রক।