মোদী-জমানায় বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তবুও মূল্যবৃদ্ধির কোপ থেকে রেহাই নেই আমজনতার। জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যের বাজার দরে আগুন লেগেছে। এর মধ্যেই ফের দুশ্চিন্তার খবর শোনাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। উৎসবের মরশুমেই আরবিআই জানাল, মূল্যবৃদ্ধির হার কবে কমবে তা এখনও অনিশ্চিত। এমনকী আগামী কয়েক মাসে তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। সেটাও বুধবার স্পষ্ট করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। কার্যত কেন্দ্রের কোর্টেই বল ঠেলেছেন তিনি। তাতে আরও প্রকট হয়ে গিয়েছে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে মোদী সরকারের ব্যর্থতা। এদিন শেষ হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মনিটারি পলিসি বৈঠক। সেখানেও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে না আসার যুক্তিতে রেপো রেট বা ব্যাঙ্কগুলিকে দেওয়া ঋণে সুদের হার অপরিবর্তিত রইল। বৈঠক শেষে শক্তিকান্ত দাস বলেন, “এতদিন ধরে খাদ্যে মূল্যবৃদ্ধি অন্যতম প্রধান সংকট ছিল। অন্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আসছিল। কিন্তু এবার অন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। পশ্চিম এশিয়ায় আবার যুদ্ধ পরিস্থিতি। সুতরাং তেল সহ অন্য পণ্যের উপর প্রভাব পড়বে। তাই রেপো রেট কমানো হল না।” অর্থাৎ, আমজনতা ব্যাঙ্কঋণের উপর ধার্য হওয়া চড়া সুদের হার দিতে বাধ্যই থাকবে। দু’বছরের বেশি সময় ধরে এই অবস্থার কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ রেপো রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে। মনে করা হয়েছিল, এবার হয়তো ভারতে তার প্রভাব পড়বে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কমাতে চলেছে রেপো রেট। কিন্তু নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকে আবার সিদ্ধান্ত হল যে, রেপো রেটে কোনও বদল হবে না। সুতরাং তা থাকবে সাড়ে ৬ শতাংশই। শুধু তা-ই নয়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধিহারের পূর্বাভাসও দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তা হতে চলেছে ৭.২ শতাংশ। রেপো রেট না কমানোর কারণ হিসেবে মূল্যবৃদ্ধির হারকে ঢাল করার অজুহাত চলছে ২০২২ সাল থেকে। তার জেরে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ। একদিকে মূল্যবৃদ্ধির কোপ রয়েছেই। অন্যদিকে গাড়ি-বাড়ির জন্য যে ঋণ নেওয়া হয়েছে, তার উপর সুদের হার অনেক বেশি। সেই ঋণশোধের মাসিক কিস্তি বা ইএমআই এখন আকাশছোঁয়া। আর এই পরিস্থিতি থেকে যে পরিত্রাণ নেই, তা উৎসবের মাসে ফের জানিয়ে দিল আরবিআই।