দেশীয় রাজনীতিতে আরও একবার প্রকট হয়ে উঠল বিজেপি-আরএসএস দ্বন্দ্ব। প্রসঙ্গত, বর্তমানে বিজেপির কেয়ারটেকার সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। শীঘই তাঁকে সরে যেতে হবে পদ্মশিবিরের সর্বভারতীয় সভাপতির পদ থেকে। আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যেই নতুন সভাপতি মনোনয়নের কথা। তবে বিগত ১০ বছর ধরে যতটা সহজ ছিল এই প্রক্রিয়া, এখন তেমনটা আর নেই। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ জুটির অনুগত কোনও নেতা সভাপতি হোন, তা একেবারেই চাইছে না আরএসএস। স্বাধীন সত্তার সভাপতি চায় তারা। অর্থাৎ, পরোক্ষে এই শর্তের কথা বুঝিয়ে প্রকৃতপক্ষে নিজেদের হাতেই বিজেপির রাশ ধরে রাখতে চাইছে সঙ্ঘ, এমনই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। বিজেপির পক্ষ থেকে কয়েক দফার বৈঠকে একাধিক নামের প্রস্তাব এলেও আরএসএস রাজি হয়নি। উল্টো দিকে সঙ্ঘ যে নামগুলির ইঙ্গিত দিয়েছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন মোদী-শাহ। তবে এখনও কোনও সমাধানের আভাস পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে বিজেপি এবং আরএসএস কর্তাদের দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে ওই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় ছিলেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিং ও বি এল সন্তোষ। আর সঙ্ঘের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানো হয়েছিল সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোশবালে ও অরুণ কুমার। মোহন ভাগবতের পর আগামী সরসঙ্ঘচালক সম্ভবত হবেন এই হোশবালে। প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে চলে আলোচনা। কিন্তু মেলেনি কোনও সুরাহাসূত্র। সভাপতি নির্বাচনের সময় সমন্বয় বৈঠকের রীতি হল, আরএসএস কোনও নামের প্রস্তাব করে না। বিজেপির পক্ষ থেকে নামের তালিকা দেওয়া হয়। আরএসএস সেই নামগুলি নিয়ে আলোচনা করে। তারপর চূড়ান্ত মতামত জানায়। তবে এই বৈঠকে আরএসএসের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে কিছু নামও বলা হয়েছে। যদিও সম্ভাব্য সভাপতি হিসেবে নয়। দলে কাদের অভিজ্ঞতা এবং সাংগঠনিক যোগ্যতা বেশি, কারা হবেন নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি, তা নিয়েই কিছু নাম উত্থাপন করে সঙ্ঘ। কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি সেই বৈঠক। বিজেপি যাদের নাম উত্থাপন করেছে, তাদের সকলেই আদতে মোদী এবং শাহের অনুগত হবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তা একেবারেই না-পসন্দ আরএসএসের।