আর জি কর কাণ্ডের পর থেকেই রাজনীতির ঘৃণ্য আগুনে লাভের রুটি সেঁকে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিরোধীরা। চলছে ঘোলা জলে মাছ ধরার হন্তদন্ত, কুৎসা, অপপ্রচার। তরুণী ডাক্তারের ধর্ষণ-খুনের পর আর জি কর হাসপাতালেই ময়নাতদন্ত ও চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের একাংশ ভেঙে ফেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জুনিয়র ডাক্তারদের ফ্রন্ট-সহ বিরোধী দলগুলি দাবি করেছিল, ক্রাইম সিন নাকি পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করা হয়েছে, লোপাট হয়েছে তথ্য-প্রমাণ! জুনিয়র ডাক্তাররা প্রশ্ন তুলেছিলেন, আর জি কর হাসপাতালেই কেন ময়নাতদন্ত করা হল? অথচ এখন প্রকাশ্যে আসছে একের এক এক তথ্য-প্রমাণ। যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে অনেকেরই। দেখা যাচ্ছে, ৯ আগস্ট ময়নাতদন্তের জন্য যে নিয়মমাফিক আবেদন করতে হয় সেই আবেদন করেছিলেন মৃত তরুণী ডাক্তারের পরিবার এবং জুনিয়র ডাক্তাররা। শুধু তাই নয়, চেস্ট মেডিসিনের যে অংশ নির্মাণকাজের জন্য ভেঙে ফেলা হয়েছিল, তার আগে ১০ এবং ১২ আগস্ট সেই জায়গা পরিদর্শন করে পিডব্লুডি ইঞ্জিনিয়র-সহ হাসপাতালেরই একটি টিম। বিস্ময়করভাবে দেখা যাচ্ছে, সেই টিমে ছিলেন তিনজন পিজিটি, পিডব্লুডির ইঞ্জিনিয়ার, চেস্ট মেডিসিনের এইচওডি, একজন নার্স। কোথায় কতটুকু ভাঙা হবে, কী নির্মাণকাজ হবে, কীভাবে হবে তা পর্যবেক্ষণ করে খতিয়ে দেখে ইন্সপেকশন মিনিটসে সই করেছিলেন এই টিমে থাকা প্রত্যেকেই!
ফলত পরিষ্কার যে, জুনিয়র ডাক্তাররা বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন তাঁদের এই সম্মতি দেওয়ার গোটা বিষয়টি। অথচ ৯ আগস্টের পর জুনিয়র ডাক্তাররা যখন কর্মবিরতিতে যান তখন তাঁরা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন। ময়নাতদন্ত, চেস্ট মেডিসিন বিভাগের একটি অংশ ভাঙা হল কেন তা নিয়ে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র ও তথ্য-প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এনেছিলেন। যাতে গলা মেলায় এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম, বিরোধী দল, তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু আর জি করের তৎকালীন অধ্যক্ষকে লেখা চিঠিতে মৃতার বাবার সম্মতিসূচক সই এবং ভাঙার ঘটনা যে সকলেই জানতেন, তা চেপে মিথ্যাচার করা হয়েছে। কেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি ঘটনা চেপে যাওয়া হল? তবে কি পরিকল্পনা করেই শুধুমাত্র সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই ঘটনা চেপে গিয়ে রাজনীতির স্বার্থে ইন্ধন জোগানো হয়েছে? যারা নিজেদের অরাজনৈতিক বলে দাবি করেছেন একদিন, সেই কৌশল তবে কোন রাজনৈতিক মস্তিষ্কপ্রসূত? উঠছে সেই প্রশ্নই।