বাংলায় সৃষ্ট বন্যা-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার থেকেই জেলা সফর শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বর্ধমান ও বাঁকুড়ায় যান তিনি। দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করেন। সারেন প্রশাসনিক বৈঠক। আর আজ, মঙ্গলবার বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন তিনি। সেই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফের রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ফের কাঠগড়ায় তুললেন ডিভিসিকে। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, বন্যার মৃতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িও পরে বানিয়ে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ডিভিসি ইচ্ছে করে অপরিকল্পিতভাবে জল ছেড়ে বাংলাকে বন্যাকবলিত করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার তিনি জানান, বন্যার কবলে পড়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করবে সরকার। পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িও তৈরি করে দেবে রাজ্য। অন্তত ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া যাদের ফসল বন্যায় নষ্ট হয়েছে, তাদের শস্যবিমার আওতায় এনে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সোমবারই পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক সভা থেকে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মোদী সরকারকে আরও একবার একহাত নিয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, কেন্দ্র ভোটের জন্য যে টাকা খরচ করে, তার ১ শতাংশ যদি রাজ্যকে দিত তাহলে এমন পরিস্থিতি সামলাতে সুবিধা হত। কিন্তু সেই টাকা না পেলেও সাধ্যমতো রাজ্য সরকার আর্থিক সাহায্য করবে বলেই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, যেখান থেকে হোক টাকা জোগাড় করে মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করে আসছেন, এটা ‘ম্যান মেড বন্যা’। ২০০৯ সালের পর এত জল এর আগে ছাড়া হয়নি বলেও দাবি তাঁর। বাংলার প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষের জীবন বিপন্ন বলে দাবি করেছেন মমতা। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য জানান হয়েছিল, রাজ্যকে জানিয়েই জল ছেড়েছে ডিভিসি। কিন্তু এই বিষয়ে সহমত হতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। বরং তাঁর দাবি, জল ছাড়ার বিষয়ে সতর্কবার্তা দূর অস্ত, বরাবরই এক তরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেয় ডিভিসি। আলোচনার প্রয়োজনটুকুও বোধ করে না। উল্লেখ্য, দামোদর ভ্যালি জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটি থেকে বাংলার দুই প্রতিনিধি পদত্যাগ করেছেন ইতিমধ্যেই।