সামনেই বিধানসভা নির্বাচন মহারাষ্ট্রে। তার আগে বড়সড় বিড়ম্বনায় বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কাউকে করা হবে কিনা, বা তা হলেও কোন দল থেকে হবে, এই নিয়ে রাজ্যের শাসক জোটের অন্দরে অব্যাহত তীব্র টানাপোড়েন। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের জেদ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। শিন্ডে তাঁকেই জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার দাবিতে অনড়। অন্যদিকে, বিজেপি নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশই শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার ব্যাপারে তাঁদের অসম্মতির কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এরইমধ্যে দল তথা জোটেও শুরু হয়েছে ভাঙন। সবমিলিয়ে মহারাষ্ট্রে ভোটের আগে প্রবল অস্বস্তিতে পদ্মশিবির। রাজ্যে বিধানসভা ভোট ঘোষণা সম্ভবত অক্টাবর মাসের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে হবে। সেই ভোটের আগে বিগত তিন তিন ধরে মহারাষ্ট্রের একের পর এক জেলায় দলত্যাগের সংবাদে চাপে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কোথাও তিনবারের প্রাক্তন এমপি দলত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। আবার কোথাও বিধায়ক দল ছেড়ে হাতশিবিরে নাম লিখিয়েছেন। এর নেপথ্যে রয়েছে শিবসেনা (শিন্ডে), অজিত পাওয়ারের এনসিপি ও বিজেপি জোটে আসন সমঝোতা এবং বিজেপির বহু নেতার টিকিট না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পাশাপাশি, নাগপুর-সহ মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজেপি নেতাকর্মীদের হতাশার বার্তাও আসছে। কারণ শিন্ডেকেই যদি মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হন, তাহলে বিজেপির রাজনৈতিক লাভ কিছুই হবে না বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। বিজেপি জোটে প্রবল সমস্যা তৈরি হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন সেটা নিয়ে। জানা যাচ্ছে, আসন সমঝোতার বৈঠকে শিন্ডে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনিই হবেন জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। এতদিন মুখ্যমন্ত্রী থাকার পর তাঁকে সামনে রেখে যদি এনডিএ ভোটে লড়াই না করে, তাহলে যে দল ধরে রাখা যে কঠিন হবে, তা সিন্ধে ভালোমতোই জানেন। কারন শুধু বিজেপির ভাঙন নয়, ভাঙন ধরছে ‘শিন্ডেসেনা’তেও। একাধিক বিধায়ক পরোক্ষ চাপ দিয়েছেন টিকিট না পেলে তাঁরা দলে থাকবেন না। জানা যাচ্ছে, বিজেপির মহারাষ্ট্র ইউনিট মাথা নত করতে নারাজ। সোমবার বিজেপির এক মুখপাত্র বলেছেন, সাম্প্রতিক কোনও বিধানসভা ভোটেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কাউকে সামনে রেখে বিজেপি ভোটে লড়াই করেনি। আগে ভোটে জয় পাওয়া লক্ষ্য। কিন্তু তিনিই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী, এই নিশ্চয়তা না পেলে শিন্ডে এবং তাঁর দলের সদস্যরা রাজি হবেন কিনা, সে নিয়ে ক্রমশই দুশ্চিন্তা বাড়ছে পদ্ম-নেতৃত্বের অন্দরে।