বাংলার সাফল্যমুকুটে ফের যোগ হল নতুন পালক। এবার কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের ‘সেরা পর্যটন গ্রাম প্রতিযোগিতা’র ‘কৃষি-পর্যটন গ্রাম’ বিভাগে দেশের সেরা ‘পর্যটন গ্রাম’ হিসাবে নির্বাচিত হল মুর্শিদাবাদ জেলার বরানগর গ্রামটি। প্রসঙ্গত, বরানগর মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ ব্লক এবং লালবাগ সাব ডিভিশনে অবস্থিত। ‘বরানগর গ্রামের’ প্রধান ঐতিহ্যবাহী পর্যটন পণ্য হল রানী ভবানীর প্রাসাদ এবং বরানগর পোড়ামাটির মন্দির কমপ্লেক্স। অষ্টাদশ শতকে রানী ভবানী নির্মাণ করেছিলেন এই প্রাসাদ ও মন্দির। তাঁর সময়ে বরানগর ‘বাংলার বারাণসী’ নামে পরিচিত ছিল। এই মন্দিরগুলি শিব, বিষ্ণু ও কালীর মতো হিন্দু দেবতার বিভিন্ন রূপের কাছে উৎসর্গীকৃত। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী, লোককাহিনী এবং দৈনন্দিন জীবনের দৃশ্যগুলিকে তুলে ধরেছে মন্দিরগুলি।
উল্লেখ্য, বরানগর মন্দির কমপ্লেক্স পর্যটক এবং তীর্থযাত্রীদের অন্যতম প্রিয় গন্তব্য। বরানগর মন্দির টেরাকোটা কমপ্লেক্সের মধ্যে চর বাংলা মন্দির, ভবানীশ্বর মন্দির, রাজ রাজেশ্বরী, মন্দির গঙ্গেশ্বর শিব মন্দির, পঞ্চমুখী শিব মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, আদ্য মন্দির, বিনোদ আখড়া ইত্যাদি। বরানগর গ্রামের স্থানীয় সম্প্রদায় গ্রামীণ হস্তশিল্পের মতো এই গ্রামের ঐতিহ্যকে প্রচার ও টিকিয়ে রাখতে তৎপর। বরানগর গ্রাম তার তাঁত ব্যবসার জন্য পরিচিত। বিশেষত বালুচুরি, জামদানি এবং টাঙ্গাইলের মতো সূক্ষ্ম সুতির কাপড় উৎপাদনের জন্য সুনাম রয়েছে এই গ্রামের। স্থানীয় মানুষেরা স্থানীয় বাজারে এবং মেলা ও উৎসবের সময় পর্যটকদের কাছে বাঁশ বেতের কারুশিল্প, মৃৎশিল্পের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করেন। স্ব-সহায়তা গোষ্ঠীর মহিলারা মন্দির কমপ্লেক্সের আশেপাশে একটি স্থানীয় স্যানিটারি টয়লেট কমপ্লেক্স চালান। দুধের পণ্য, জ্যাম এবং জেলি, পাফড রাইস, আচার ইত্যাদি বিক্রি হয় সেখানে। পাশাপাশি, পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য এই অনেক হোম স্টে তৈরি করা হয়েছে এই গ্রামে।