আরও একবার আর জি কর কাণ্ডে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকে ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, সোমবার বিকেল পাঁচটায় মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাসভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁদের। এদিন সকালে রাজ্যের তরফে ই-মেল পৌঁছেছে জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে। এই মেল পাওয়ার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে বৈঠকে বসেন জুনিয়র ডাক্তাররা। একমাসেরও বেশি সময় ধরে যে অচলাবস্থা চলছে এখনই তার অবসান হোক, এমনটাই চাইছেন তাঁরা। তবে নিজেদের পাঁচদফা দাবিতেও অনড় রয়েছেন। এদিন অবশ্য রাজ্যের তরফে পাঠানো ই-মেলে স্পষ্ট করেই লেখা রয়েছে, দু’তরফের পূর্ণ বিশ্বাসের আবহে বৈঠক হবে। তবে বৈঠকের কোনও ভিডিওগ্রাফি বা লাইভ টেলিকাস্ট হবে না। কারণ বিষয়টি বিচারাধীন। প্রসঙ্গত, অচলাবস্থা কাটাতে বৃহস্পতিবার রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে নবান্নে গিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রাথমিকভাবে ১৫ জন প্রতিনিধিকে ডাকা হলেও পরবর্তীতে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে তাঁদের ৩২ জন প্রতিনিধিকেই বৈঠকে আসার অনুমতি দেওয়া হয়। বিকেল ৫ টায় বৈঠকের সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। তবে ডাক্তারদের বাস পৌঁছয় বিকেল ৫টা ২৩ মিনিটে। এরপর বৈঠক সরাসরি সম্প্রচারের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। এই দাবি মেনে নেয়নি প্রশাসন। তা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ টানাপড়েন চলে। রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজি নিজে এসে বোঝানোর পরেও রাজি হননি জুনিয়র ডাক্তাররা। শেষমেশ বৈঠক ভেস্তে যায়।
উল্লেখ্য, এরপরই শনিবার বৃষ্টিভেজা সকালে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনামঞ্চে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা আমার ভাইবোন। আমি যদি আপনাদের ধর্না মঞ্চে আসতে পারি, তাহলে আমি বাকিটাও পারব। আমাকে একটু সময় দিন, একদিনে তো পারব না। দুর্নীতি নিয়ে আপনাদের কোনও অভিযোগ থাকলে নিশ্চয়ই তদন্ত করে সাজা দেব। তাই আপনারা কাজে ফিরুন। আমি জোর করে তুলে দিতে চাই না। আমি আপনাদের দিদি হিসাবে বলতে এসেছি, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নয়। আমি আপনাদের আন্দোলনে সমব্যথী। ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।” মুখ্যমন্ত্রীর এই আবেদনের পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী যখন যেখানে বলবেন সেখানেই আলোচনায় বসতে তাঁরা রাজি। নিজেদের অবস্থান জানিয়ে নবান্নে মেলও করেন তাঁরা। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয় জুনিয়র ডাক্তারদের। জুনিয়র ডাক্তাররা কালীঘাটে পৌঁছলেও তাঁদের দাবি মেনে বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার বা ভিডিও রেকর্ডিং কোনওটাই করা হবে না বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়। আগের বারের মতোই ভেস্তে যায় বৈঠক। ডাক্তারদের একগুঁয়েমি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন চিকিৎসক মহলের একাংশ। আঙুল উঠছে কতিপয় উগ্র বাম চিকিৎসকের দিকেও। শেষমেশ আজ বৈঠক হয় না, সেদিকেই তাকিয়ে সবাই।