শীর্ষে আদালত আরও একবার ধাক্কা গেল ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলির অতিপরিচিত ‘বুলডোজার নীতি’। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন সময় এই রাজ্যগুলিতে নেতাদের মুখে শোনা গিয়েছে বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার নিদান। এ নিয়ে আগেও বিজেপিকে নিশানা করেছে সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। যে কোনও ঘটনায় অভিযুক্তর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হওয়ার আগেই তাঁর সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বুলডোজার দিয়ে। এই মাসের শুরুতে একবার এই ধরনের নিম্নমানের বিচারের ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার ফের এই ধরনের সরকারি পদক্ষেপের সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে জানায়, অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে এনে এভাবে কারও সম্পত্তি ধ্বংস করার যায় না। এই ধরনের কাজ আইনের উপর বুলডোজার চালানোর সমান। জাভেদ আলি মেহবুবামিয়া সইদ নামে গুজরাটের খেড়া জেলার এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে জমি দখল করে বাড়ি বানানোর অভিযোগ আসে। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন এবং বুলডোজার দিয়ে তাঁর ভিটে ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় পৌরসভার আধিকারিকরা।
এমতাবস্থায় শীর্ষ আদালতে আবেদন জানান ওই ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার বিচারপতি হৃষিকেশ রায়, বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সইদের আইনজীবী এই বিষয়ে আদালতে জানান, বিতর্কিত বাড়িটি কাঠলাল গ্রামের। ২০০৪ সালের অগস্টে গ্রাম পঞ্চায়েত তার মক্কেলকে ওই জমিতে একটি বাড়ি তৈরির অনুমতি দিয়েছিল। তিন প্রজন্ম গত দুই দশক ধরে সেখানেই থাকে। উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর, অন্য একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের এক বেঞ্চ প্রশ্ন ওঠে, কীভাবে শুধুমাত্র একজন অভিযুক্ত বা অপরাধী হলে কারও বাড়ি ভেঙে ফেলা যায়? সুপ্রিম কোর্ট জানায় এইভাবে বাড়ি ভাঙার আগে, কিছু নির্দেশিকা মানতে হবে। একটি নির্দেশাবলীর প্রস্তাব দেয় আদালত। বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, “এই ধরনের হুমকির বিষয়ে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না আদালত। আইনের শাসন রয়েছে এমন কোনও দেশে এটা অকল্পনীয়।” গুজরাট সরকারকে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে তার জবাব দিতে হবে বলেও জানানো হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সইদের বাড়ি ভাঙা যাবে না, এমনই বার্তা দিয়েছে আদালত।