চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে প্রাণ গিয়েছে আরও এক রোগীর। তিনটি সরকারি হাসপাতালে ঘুরেও মেলেনি চিকিৎসা। দেগঙ্গার যুবক সফিকুল ইসলামের মৃত্যুর জন্য জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিকেই দায়ী করেছে পরিবার। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করল একটি প্রতিনিধিদল। শফিকুলের স্ত্রীকে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে বলেও জানানো হয়েছে তাদের তরফে। সম্প্রতি বাইক দুর্ঘটনায় জখম হন দেগঙ্গার সোহাই শ্বেতপুরের বাসিন্দা সফিকুল। তাঁকে প্রথমে বারাসাত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রেফার করা হয় আর জি কর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা না মেলায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং এসএসকেএমেও ভর্তি করানোর চেষ্টা করেছিল পরিবার। পরিজনদের অভিযোগ, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে চারটি সরকারি হাসপাতাল ঘুরেও গুরুতর জখম যুবকের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়নি। পরে বাধ্য হয়ে তাঁকে বারাসতের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। মঙ্গলবার সেখানে প্রাণ হারান সফিকুল।
এরপর বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে জানিয়েছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে মৃতের বাড়িতে গিয়ে পরিজনদের পাশে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকালে মৃত দিনমজুর শফিকুলের বাড়িতে যান দেগঙ্গার তৃণমূল বিধায়ক রহিমা বিবি, অশোকনগরের বিধায়ক তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী-সহ স্থানীয় পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা। দীর্ঘ ক্ষণ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মৃতের স্ত্রী সাইনারা বেগমের বায়োডেটা নিয়েছেন নারায়ণ গোস্বামী। তাঁকে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিবেচনা করছেন বলে জানিয়েছেন অশোকনগরের বিধায়ক। ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের শফিকুলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলেন। আগামী দিনে আমরা তাদের পাশে আছি, সে কথাই জানাতে এসেছিলাম। মৃত যুবকের স্ত্রীর বায়োডাটা নিয়েছি, এ বিষয়ে যা করার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করবেন।’’ যুবকের মৃত্যু প্রসঙ্গে ক্ষোভের সুরে রহিমা বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা তাঁদের দায়িত্ব পালন না করায় এক যুবককে প্রাণ হারাতে হল। আমরা পাশে থাকছি, কিন্তু পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল’’, জানিয়েছেন নারায়ণ গোস্বামী।