union budget নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে বাংলা। এবার ফের ফুটে উঠেছে একই চিত্র। মঙ্গলবার তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর তার পর থেকেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। অনেকের মতেই, এনডিএ-র দুই মূল শরিক দলকে সন্তুষ্ট করাই এই বাজেটের মূল উদ্দেশ্য। বাজেটে নির্মলা সীতারামন কার্যত দুহাতে ঢেলে দিয়েছেন বিহারকে। দরাজ হস্তে দান করেছেন অন্ধ্রপ্রদেশকেও। অথচ বাংলার ঝুলি কার্যত শূন্য। পাশাপাশি, খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কোনও সুরাহা নেই এই বাজেটে। আজ বাজেট পেশ হওয়ার পরেই একে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট, দিশাহীন, গরিব বিরোধী, জন বিরোধী বলে তীব্র কটাক্ষ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। “এই বাজেট দিশাহীন, গরিব বিরোধী, জনবিরোধী। শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই বাজেট করা হয়েছে। আমি কোনও আলো দেখতে পাচ্ছি না। অন্ধকার, অন্ধকার শুধু অন্ধকার। পশ্চিমবঙ্গকে হিংসা করে কেন্দ্র। তাই আমাদের বার বার বঞ্চিত করে। অপমান করলে তার জবাব মানুষ দেবে”, এদিন বিধানসভায় নিজের দফতরে বসে বললেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, বাজেটে বাংলাকে ১ লক্ষ ১৭ হাজার কোটি টাকার কোনও কিছুই দেয়নি মোদী সরকার। বরং জিএসটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলকে খুশি করতে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এই বাজেট তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রকে তীব্র কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি এরকম কখনও দেখিনি, একটা সরকার শেয়ারের টাকা দিয়ে, শেয়ার স্ক্যাম করে আর আর্থিক প্যাকেজে করে, কেবল অর্থ দিয়ে, মন্ত্রক না দিয়ে, স্পিকারপদ না দিয়ে, বৈষম্য তৈরি করছে। অন্ধ্র, বিহারতে টাকা দিয়েছে, ঠিক আছে। কিন্তু বৈষম্য তৈরি করা ঠিক নয়।” এখানেই থেমে থাকেননি মমতা। “যদি মনে করে বাংলাকে বঞ্চিত করবে এভাবে, মানুষ গর্জন করবে। যেগুলো ওঁদের পছন্দ, তাই করবে। যার অনেক আছে, তাকে পাইয়ে দেবে, যার কিছু নেই তাকে কিছু দেবে না। বাংলায় এত প্রাকতিক বিপর্যয় হয়, তাকে কোনও টাকা দিল না। আশপাশের সব রাজ্যকে দিল। বাংলা একা নয়, বাংলা একাই ১০০। ভোটের মঞ্চে দেখা হবে। বাংলায় ১১-সাড়ে ১১ কোটি মানুষ। প্রচুর ভোট, সেটা মনে রাখবেন। ১০০ দিনের কাজের কোনও খোঁজ নেই। তিন কোটি বাড়ি যে দেওয়া হবে, কাকে দেওয়া হবে? সাধারণ ঘরের মেয়েদের কথা ভাবেনি। সোনা-রুপোর ওপর ভর্তুকি দিয়েছে। আগেরবারও জিরের ওপর ট্যাক্স ছিল, কিন্তু হিরের ওপর ছিল না”, স্পষ্ট বক্তব্য তাঁর।
!['পক্ষপাতদুষ্ট, দিশাহীন, গরিব বিরোধী, জনবিরোধী' - মোদী সরকারের নয়া বাজেটকে কড়া ভাষায় আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতার 2 IMG 20240723 WA0000 union budget](https://ekhonkhobor.com/wp-content/uploads/2024/07/IMG-20240723-WA0000.jpg)
পাশাপাশি, শিক্ষাক্ষেত্রেও বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিষয় তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “মূল্যবৃদ্ধির দিকে কোনও নজর দিল না। মাত্র ১ লক্ষ ছাত্রকে টাকা দেবে বলছে। ১৩০ কোটির দেশে তো সেটা কিছুই নয়। আমরা তো সবাইকে দিয়েছি, ১০ লক্ষ টাকা করে স্টুডেন্ট ক্রেডিট। আমাদের ১ লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা এখনও পাওনা কেন্দ্রের থেকে। এক পয়সাও দেয়নি। উল্টে বঞ্চিত করছে বাংলাকে। এখান থেকে জিএসটি নিয়ে গেছে। আমরা আর কোনও ট্যাক্স করতে পারি না। শুধু সেজ করেছে, যাতে সব লাভ ওদের হয়। এই বাজেট জনবিরোধী, গরিব বিরোধী, দিশাহীন। এটা পলিটিক্যালি বায়েসড বাজেট। একটা পার্টিকে খুশি করতে এই বাজেট। আয়ুষ্মান ১০০ শতাংশ দিক। আমার আপত্তি নেই। কিন্তু এই স্কিমে তো ৬০ শতাংশ দেয়। ৪০ শতাংশ টাকা প্রাপককেই গুনতে হবে। তারা কোথায় পাবে? আমাদের স্বাস্থ্যসাথী পুরোটাই ফ্রি। এই জন্যই আমরা আয়ুষ্মান ভারতে যোগ দিইনি।” বাজেট পেশের পর রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, নীতীশ কুমারকে খুশি রাখতেই কি বিহারের আর্থিক প্যাকেজ? সেই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিহারের ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। আমি কোনও পলিটিক্যাল পার্টির নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কিছু বলব না। আমি কেবল বলব, এই বাজেটে কোনও ভিশন নেই, কেবল পলিটিক্যাল পার্টির মিশন আছে। আমি কোনও আলো দেখতে পাচ্ছি না বাজেটে। অন্ধকার।” এছাড়া, পাহাড় নিয়ে কেন্দ্রের দুয়োরানিসুলভ আচরণ নিয়েও সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। “বাজেটে পাহাড়কে ভুলে যায়। ভোটের সময় মনে রাখে কেবল, তার পরে ভুলে যায়। বাংলাকে ওরা হিংসা করে, তাই বাংলাও ব্রাত্য করে ওদের”, অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1815718237952196707
union budget budget