আর মাত্র কয়েকটা মাসের অপেক্ষা। তার পরেই বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের শ্রেষ্ঠ পার্বণ দুর্গাপুজো। কলকাতা বা শহরতলির পুজোগুলিতে প্রতিমা নিয়ে ব্যস্ততার সময় যদিও এখনও আসেনি। তবে, বিদেশে প্রতিমা পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে দিতে হয় এখন থেকেই। কারণ জাহাজে করে সেগুলি যেতে সময় লাগে বেশ কয়েক মাস। কানাডা, আমেরিকা থেকে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন— কুমোরটুলি থেকে বিদেশে ফাইবারের প্রতিমার পাড়ি দেওয়ার সংখ্যা অন্য বারের থেকে এবার অনেকটাই বেশি জানাচ্ছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা। সেই সঙ্গে বেড়েছে বিদেশগামী প্রতিমার উচ্চতাও।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রবাসী বাঙালিদের থেকে এ বার প্রতিমা পাঠানোর বরাত পেয়েছেন মৃৎশিল্পী মালা পাল। তিনি বলেন, ‘হয়তো ওখানে জনজীবন অনেকটা স্বাভাবিক। তাই ফের বরাত পেলাম ইউক্রেন থেকে। আমার প্রতিমা তৈরি, কিছু দিনের মধ্যেই জাহাজে উঠবে।’ আর এক মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল জানাচ্ছেন, স্পেনের বার্সেলোনাগামী তাঁর প্রতিমার উচ্চতা সাত ফুট। এত উঁচু প্রতিমা এর আগে পাঠাইনি। এ বার ২২টি প্রতিমা পাঠাচ্ছি। গত বারের চেয়ে বেশি। তিনি আরও জানান, দুর্গার বরাত পাওয়ার তালিকায় এ বছর যোগ হয়েছে বেশ কিছু নতুন দেশ। যেমন, এ বার মিন্টুর প্রতিমা পাড়ি দিতে চলেছে খাস দুবাইয়ে।
শুধু বিদেশের বাঙালিদের জন্যই প্রতিমা বানিয়ে থাকেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী কৌশিক ঘোষ। এ বছর বিদেশে তাঁর পাঠানো প্রতিমার সংখ্যা ৩৭-৩৮টি। গত বারের তুলনায় সংখ্যাটা বেড়েছে। কৌশিক বলেন, ‘প্রতিমার চাহিদা যেমন বেড়েছে, সেই সঙ্গে প্রতি বছর বাড়ছে ওই সব প্রতিমার উচ্চতাও। এতে আখেরে শিল্পীরাই বেশি লাভের মুখ দেখছেন। এ বার আমেরিকার ডালাসে আমার যে প্রতিমা যাবে, তার উচ্চতা সাড়ে আট-ন’ফুট। রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া থেকেও বায়না পেয়েছি। সব মিলিয়ে এ বার কুমোরটুলি থেকে ৭০-৮০টি প্রতিমা বিদেশযাত্রা করছে। জাহাজ আর বিমান, দু’ভাবেই পাঠানো হয় ওই সব প্রতিমা।’