গ্রুপ পর্বের প্রথম দুটি ম্যাচ জিতলেও বুধবার রাতে জর্জিয়ার বিরুদ্ধে তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে হেরে গেল পর্তুগাল। ২-০ গোলে জিতে গ্রুপের তৃতীয় দল হিসাবে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে নিজেদের জায়গা পাকা করে নিল জর্জিয়া। অবশ্য জর্জিয়ার কাছে হারলেও গ্রুপ শীর্ষে থেকেই পরের রাউন্ডে পৌঁছল পর্তুগাল। গ্রুপের অপর খেলায় ১০ জনের চেকিয়ার বিরুদ্ধে টানটান ম্যাচে জিতল তুরস্ক। ২-১ গোলে শেষ হল খেলা। ফলে এই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসাবে শেষ ষোলোয় গেল তুরস্ক। বিদায় নিল চেকিয়া। এদিন নক আউট পর্বে নিজেদের জায়গা পাকা করতে জয় ছাড়া কোনও উপায় ছিল না জর্জিয়ার। শুরু থেকেই আক্রমণের পথ বেছে নেয় তারা। ২ মিনিটের মাথায় পর্তুগালের ডিফেন্ডার আন্তোনিয়ো সিলভার ভুল পাস ধরে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে গোল করে জর্জিয়াকে এগিয়ে দেন ভিচা কারাতস্কেলিয়া।।শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে খেলায় ফিরতে শুরু করে পর্তুগাল। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বক্সের কাছে ছটফট করছিলেন। এই ম্যাচে শুরু থেকেই খেলেন ফ্রান্সিস্কো কনসেসাও। ভাল সুযোগ তৈরি করছিলেন তিনি। ১৭ মিনিটের মাথায় প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ফ্রি কিক পায় পর্তুগাল। ভাল শট মারেন রোনাল্ডো। তাঁর ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার গতিবেগের শট ভাল বাঁচান জর্জিয়ার গোলরক্ষক। পর্তুগাল চাপ বাড়ালেও জর্জিয়ার রক্ষণ ভাঙতে পারছিল না তারা। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় জর্জিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু কর্নার থেকে রোনাল্ডোর শট আটকে দেন জর্জিয়ার গোলরক্ষক। ৫০ মিনিটে জর্জিয়ার হয়ে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ নষ্ট করেন কারাতস্কেলিয়া। তিন মিনিট পরেই আবার ভুল করেন সিলভা। লোকোসভিলিকে বক্সে ফাউল করেন তিনি। ভার দেখে রেফারি পেনাল্টি দেন। এ বার গোল করতে ভুল করেনি জর্জিয়া। ঠান্ডা মাথায় ২-০ করেন মিকাউতাজ। চলতি ইউরোয় তিনি নিজের তিন নম্বর গোল করলেন এদিন।
শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলে জেতে জর্জিয়া। অন্যদিকে প্রি-কোয়ার্টার জায়গা করতে হলে তুরস্কের বিরুদ্ধে জিততে হল চেকিয়াকেও। ফলে আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে তারা। প্রথমার্ধের শুরুতে তুরস্কই চাপে ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে ভুল করেন চেকিয়ার আন্তোনিন বারাক। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে জোড়া হলুদ কার্ড অর্থাৎ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তিনি। ফলে ম্যাচের ৭০ মিনিট ১০ জনে খেলতে হয় চেকিয়াকে। ১০ জনে হওয়ার পরেও চেকিয়া আক্রমণ থামায়নি। আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণের খেলা চলছিল। বিরতির আগে ভাল সুযোগ পায় চেকিয়া। জুরাসেকের শট ভাল বাঁচান গুনক। গোলশূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দু’দল। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় তুরস্ক। তার ফলও পায় তারা। ৫১ মিনিটের মাথায় ইয়েলদিজের শট ভাল বাঁচান চেকিয়ার গোলরক্ষক স্টানেক। ফিরতি বল পান কালানোগলু। তাঁর ডান পায়ের শট বাঁচাতে পারেননি স্টানেক। এগিয়ে যায় তুরস্ক। পিছিয়ে পড়েও আক্রমণ থামায়নি চেকিয়া। তার ফল পায় তারা। ৬৬ মিনিটে তুরস্কের গোলরক্ষক বল ধরতে গিয়ে ভুল করেন। সেই ভুল কাজে লাগিয়ে গোল করে সমতা ফেরান সুচেক। তুরস্ক প্রতিবাদ করলেও ভার দেখে রেফারি জানান, গোল বৈধ। তবে ড্র করলে চেকিয়ার কোনও লাভ ছিল না। তাই তারা আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে সুযোগ পায় তুরস্কও। বক্স থেকে বক্সে চলছিল আক্রমণ। সংযুক্তি সময়ে এগিয়ে যায় তুরস্ক। প্রতি আক্রমণ থেকে চেকিয়ার বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে গোল করেন টোসুন। সেখানেই কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় তুরস্কের জয়। পর্তুগালের সমান ৬ পয়েন্ট নিয়ে পরের রাউন্ডে উঠল তারা।