একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরে চব্বিশের লোকসভা ভোটেও বাংলায় হতাশাজনক ফল হয়েছে বিজেপর। এই পরিস্থিতিতে এবার জেলাস্তরে বড়সড় সাংগঠনিক রদবদলের পথে হাঁটতে চলেছে তারা। পুজোর মধ্যেই বদল হতে পারে প্রায় ১৫টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। এমনই খবর গেরুয়া শিবির সূত্রে। জানা গিয়েছে, চব্বিশের লোকসভা ভোটে যেখানে যেখানে খারাপ ফল হয়েছে সেখানকার অধিকাংশ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বদল করা হবে। একইসঙ্গে তিনশোর বেশি মণ্ডল সভাপতিও বদল করা হতে পারে। সিংহভাগ বুথ কমিটির খোলনলচেও ঢেলে সাজানো হবে। প্রসঙ্গত, কদিন আগেই সল্টলেক পার্টি অফিসে ভোট পরবর্তী পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সেখানেই ঠিক হয়েছিল, একেবারে জেলা থেকে রিপোর্ট নেওয়া হবে। সেই মতো বিভিন্ন জেলায় পর্যালোচনা বৈঠক চলছে। মণ্ডল সভাপতি, জেলা ও জোন ইনচার্জ, বিধানসভা ইনচার্জদের নিয়ে এই বৈঠক হচ্ছে। চলতি জুন মাসের মধ্যেই নিচুতলার রিপোর্ট জমা পড়বে রাজ্য কমিটির কাছে। তার পর সেই রিপোর্ট ঘষামাজা করে রাজ্য কমিটি পাঠাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে।
কিন্তু কেন লোকসভা ভোটে এই হতাশাজনক ফলাফল? কেন নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো গেল না? উনিশের প্রাপ্ত ১৮টা আসন কেনই-বা নেমে এল ১২টাতে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে সংগঠনের হাল বুঝতে এখনও পর্যন্ত যে কটি পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে, তাতে নিচুতলার নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে যে যে বিষয় উঠে আসছে তা হল এক, অনেক পুরনো কার্যকর্তাকে ভোটের কাজে যুক্ত করা হয়নি। দুই, বুথ সংগঠন একেবারেই ফোঁপরা, তিন, বুথ নিয়ে ভুল রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। প্রায় সর্বত্রই বলা হয়েছিল ভালো ফল হবে। সংগঠন মজবুত। কিন্তু বাস্তবে সেটা ছিল না। চার, বাড়ি বাড়ি প্রচারেই খামতি ছিল বিজেপি সমর্থকদের। ভোটারদের কাছে সেভাবে কেউ যায়নি। পাঁচ জেলা সভাপতির সঙ্গে দলের প্রার্থীদেরই সমন্বয়ের অভাব ছিল অধিকাংশ লোকসভা কেন্দ্রেই। ছয়, কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘনঘন বৈঠক, বড় বড় সভা করতে গিয়ে জনসংযোগে ঘাটতি হয়েছিল। পাড়ায় পাড়ায় সেভাবে ভোটারদের কাছে যেতেই পারেনি দলের কর্মীরা। এইসব কারণগুলো নিয়ে চর্চা চলবে।