সোমবার ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। ২০২৩ সালের ২ জুন উড়িষ্যার বালেশ্বরের বাহানগায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরেই একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলে। তদন্ত করে সিবিআইও। উঠে আসে রেলকর্মীর গাফিলতি এবং সিগন্যাল বিভ্রাটের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ঠিক এক বছর পর সেই একই প্রশ্ন আবারও মাথাচাড়া দিল। কীভাবে ঘটল এত বড় দুর্ঘটনা? যান্ত্রিক গোলযোগ না কি সিগন্যাল বিভ্রাট? না কি আবারও গাফিলতিই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কারণ? যদিও সোমবারের কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে এখনও সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি রেল। তবে রেলের প্রাথমিক অনুমান, লাল সিগন্যাল দেখতে পাননি মালগাড়ির চালক। এই কারণেই একই লাইনে এসে যায় দুটি ট্রেন।
এক্ষেত্রে আরও তথ্য উঠে এসেছে, যে রুটে দুর্ঘটনা হয়েছে, সেই রুটে সকাল থেকেই সিগল্যাল খারাপ ছিল। রেল সূত্রের খবর, সকাল ৫টা ৫০মিনিট থেকে ওই রুটের স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং সিস্টেমে সমস্যা ছিল। উল্লেখ্য, স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং সিস্টেমে ত্রুটি দেখা দিলে, স্টেশন মাস্টার টিএ-৯১২-র নামে একটি লিখিত নোট জারি করেন। এর মাধ্যমে লোকো পাইলট অর্থাৎ ট্রেন চালককে সিগন্যাল মানার ক্ষেত্রে সমস্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। গতকাল রেল বোর্ডের সিইও জয়া ভার্মা সিনহা তাঁর বিবৃতিতে বলেন যে প্রাথমিকভাবে মালগাড়ির চালকের সিগন্যাল মানতে ত্রুটি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রেল আধিকারিক আরও জানান, রাঙাপানির স্টেশন মাস্টার মালগাড়িটিকে ত্রুটিপূর্ণ সিগন্যাল অতিক্রম করার অনুমতি দেওয়ার জন্যই টিএ-৯১২ নোট জারি করেছিলেন, নাকি লোকো পাইলট নিজেই লাল সংকেত লঙ্ঘন করেছিলেন তা তদন্তের পরেই জানা যাবে। তদন্তের আগেই কীভাবে চালকের উপর ‘দায় চাপাচ্ছে’ রেল, এই প্রশ্নই তুলেছে লোকো পাইলট সংগঠন। চালকের ভুলই দুর্ঘটনার কারণ, রেলের প্রাথমিক অনুমান মানতে নারাজ ইন্ডিয়ান রেলওয়ে লোকো রানিংম্যান অর্গানাইজেশন। সংগঠনের মতে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই দুর্ঘটনার জন্য লোকো পাইলটকে দায়ী ঘোষণা করা ঠিক নয়। এদিকে এমনও তথ্য ইঠে এসেছে, মালগাড়ির চালকের কাছেও ছিল কাগুজে অনুমতি। তবে কি সত্যিই চালকেরই দোষ ছিল? যদি মালগাড়ির চালকের কাছে কাগুজে অনুমতি থাকে তবে গলদ ঠিক কোথায় ছিল, নানান প্রশ্ন দানা বাধতে শুরু করেছে।