লোকসভা নির্বাচনের ফল দেশের রাজনৈতিক ছবিটা অনেকটাই বদলে দিয়েছে। একইসঙ্গে, রাজ্যসভাতেও শাসক-বিরোধী সাংসদের সংখ্যার ভারসাম্যটা বদলে যেতে পারে। আসলে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যসভার ১০ সদস্য নির্বাচনে জয়ী হয়ে লোকসভায় পাড়ি দিয়েছেন। ফলে, সংসদের উচ্চকক্ষের ১০টি আসন খালি হয়ে গিয়েছে। অসম, বিহার ও মহারাষ্ট্রের ২টি করে আসন এবং হরিয়ানা, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান ও ত্রিপুরার ১টি করে আসন।
রাজ্যসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে এই শূন্য পদগুলির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। কাজেই নির্বাচন কমিশন যেকোনও সময়ই রাজ্যসভার এই ১০টি আসনের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে। কংগ্রেস এবং তার নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট লোকসভা নির্বাচনে দুর্দান্ত ফল করলেও, রাজ্যসভায় তারা ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই দশটি আসনের মধ্যে সাতটি ছিল বিজেপির, দুটি কংগ্রেসের এবং একটি আরজেডির। তার উপর এই ১০টি রাজ্যেই এনডিএ-র পাল্লা ভারী।
কংগ্রেস নেতা কেসি বেনুগোপাল এবং দীপেন্দর হুডা রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন যথাক্রমে রাজস্থান এবং হরিয়ানা থেকে। দুজনেরই রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে দুই বছর করে মেয়াদ বাকি আছে। তবে, ইতিমধ্যে রাজস্থানে ক্ষমতার হাতবদল ঘটেছে। কংগ্রেসকে সরিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। এই অবস্থায়, এই রাজ্যসভা আসনটি কংগ্রেসের হাতছাড়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অ্যদিকে, হরিয়ানার রাজনৈতিক সমীকরণ এখন এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে যে, বিজেপি এবং কংগ্রেস প্রায় সমান শক্তিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, রাজ্যসভার আসনটির জন্য বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। বড় ভূমিকা নিতে পারে নির্দল এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলের বিধায়করা।
আরজেডি নেত্রী মিসা ভারতী রাজ্যসঙার সদস্য ছিলেন বিহার থেকে। তিনি ছাড়াও, বিজেপির বিবেক ঠাকুর জেতায় বিহারে আরও একটি রাজ্যসভার আসন ফাঁকা হয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে ক্ষমতায় আছে নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। রাজ্য বিধানসভার যা অবস্থা, তাতে দুই আসনেই একসঙ্গে ভোট হলে, বিজেপি এবং আরজেডি-র একটি করে আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, যদি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এই আসনদুটিতে ভোট করা হয়, তবে আরজেডির পক্ষে রাজ্যসভার আসনটি ধরে রাখা কঠিন হবে। কাজেই, ইন্ডিয়া জোট তাদের হাতে থাকা তিনটি রাজ্যসভা আসনের মধ্যে অন্তত দুটি হারাতে পারে।