নিট বা সর্বভারতীয় মেডিক্যাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় সারা দেশ। একের এক বেআব্রু হচ্ছে বিস্ফোরক তথ্য। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে ইতিমধ্যেই পাটনা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে আয়ুশ রাজ নামে এক পরীক্ষার্থী। তাঁর দাবি টাকার বিনিময়ে তিনি প্রশ্নপত্র পেয়েছিলেন। পরীক্ষা হলে ঢুকে তিনি দেখেন, তাঁর পাওয়া প্রশ্নপত্র ও আসল প্রশ্নপত্র হুবহু এক। শুধু তাই নয়, এই ঘটনায় বিহার পুলিশের হাতে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ১৯ জন। তবে সরকারের দাবি, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে এখনও এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দৈনিক ভাস্কর’-এর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঘটনার তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত যে ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পাটনা পুলিশ তাঁদের মধ্যে অন্যতম আয়ুশ রাজ নামের এক পরীক্ষার্থী। পুলিশকে দেওয়া বয়ানে আয়ুশের দাবি, “পাটনার লার্ন হোস্টেলে গত ৪ঠা মে রাতে আমায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমায় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। একইসঙ্গে দেওয়া হয় উত্তরপত্র। তা পুরো মুখস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেদিন আমার সঙ্গে দেখানে উপস্থিত ছিলেন আরও ২০-২৫ জন পরীক্ষার্থী। এর পর পরীক্ষা হলে প্রবেশ করে আমি দেখি আমাকে দেওয়া প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হুবহু এক।”
ইতিমধ্যেই উক্ত যুবকের বয়ান ইতিমধ্যেই আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। পুলিশের এফআইআরে স্পষ্টভাবে দাবি করা হয়েছে, ৫/৫/২০২৪ রাত ২টো নাগাদ আমাদের কাছে খবর আগে পরীক্ষা সঞ্চালন বিভাগ ও কিছু পরীক্ষার্থীদের উদ্যোগে নিট পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরেই JH01BW-0019 নম্বরের একটি সন্দেহজনক গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেই মতো আমরা সেখানে গিয়ে গাড়িটি আটক করি। এর পর গাড়িটির ড্রাইভার পালানোর চেষ্টা করে। গাড়িটিতে মোট ৩ জন ছিলেন ৪ জন পরিক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ডের জেরক্স কপি পাওয়া যায় তাঁদের থেকে। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করে, পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের সঙ্গে রফা করে প্রশ্নফাঁস করছিল তাঁরা। আরও একাধিক সেন্টারে এই একই ঘটনা ঘটেছে। তবে এই কিছুর পরও বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান স্পষ্ট ভাবে জানান, “নিট পরীক্ষার কোনওরকম দুর্নীতি, প্রশ্নফাঁস বা বেনিয়মের ঘটনা ঘটেছে এইরকম পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। এবং আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষক সংস্থা এনটিএ’র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের কোনও প্রশ্নই ওঠে না।” তবে সরকার যতই সাফাই দিক না কেন, বিতর্ক কমছে না একচুলও। কারণ, এবছর নিট পরীক্ষায় বেনজিরভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে ৬৭ জন। পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পাশাপাশি অনেককে গ্রেস মার্কস দেওয়ারও অভিযোগ তোলেন পরীক্ষার্থীরা। তবে মামলার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারই যে ১,৫৬৩ জন পরীক্ষার্থী ভুল প্রশ্নের জন্য গ্রেস মার্কস পেয়েছিলেন তাঁদের সেই বাড়তি গ্রেস মার্কস বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। সবমিলিয়ে যথেষ্ট চাপে কেন্দ্রীয় সরকার।
![‘পরীক্ষার আগেই পেয়েছিলাম আসল প্রশ্নপত্র!’ - নিট বিতর্কে বিস্ফোরক দাবি এক পরীক্ষার্থীর, তুঙ্গে তোলপাড়](https://ekhonkhobor.com/wp-content/uploads/2024/06/WhatsApp-Image-2024-06-15-at-13.12.11-2.jpeg)