তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণের দিন, রবিবার বৈঠকে বসেছিল সিপিএম পলিটব্যুরো। সোমবার সেই বৈঠকের প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লির একে গোপালন ভবন। কিন্তু সেই বিবৃতিতে বাংলার নামোল্লেখ পর্যন্ত নেই! যা দেখে হতবাক রাজ্য সিপিএমের অনেক প্রথম সারির নেতা। ঘরোয়া আলোচনায় তাঁরা স্পষ্টই বলছেন, অতীতে কবে এমন হয়েছে বা আদৌ হয়েছে কি না, মনে করতে পারছেন না।
সিপিএম পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে লোকসভা নির্বাচন এবং ফলাফল সম্পর্কে তাদের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। যার মোদ্দা কথা, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে বিজেপির যে ‘অগ্রগমন’ দেখা গিয়েছিল, এ বার তা থমকে গিয়েছে। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ফলাফল নিয়েও ইচিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে পলিটব্যুরো। এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় অংশে ‘বামেদের পারফরম্যান্স’ শীর্ষক অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছে, ‘বামদলগুলি সামান্য হলেও লোকসভায় তাদের উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে পেরেছে। বামেদের মোট আট জন সাংসদ লোকসভায় যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে চার জন সিপিএম, দু’জন সিপিআই এবং দু’জন সিপিআই (এমএল)-এর।’
এর পরেই লেখা হয়েছে, ‘পলিটব্যুরো দলের পারফরম্যান্সে হতাশ। বিশেষত কেরলের ফলাফল নিয়ে। রাজ্য কমিটিগুলির পর্যালোচনার পর দলের উচিত গভীরে গিয়ে পর্যালোচনা করা।’ কেরালার কথা উল্লেখ করা হলেও বাংলার নামটুকুও নেই পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে। ২০১৯ সালের মতো ২০২৪ সালেও বাংলায় ‘শূন্য’ পেয়েছে সিপিএম তথা বামেরা। এই প্রথম লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়েছিল তারা। কংগ্রেস একটি আসন জিততে সক্ষম হলেও সিপিএম খাতা খুলতে পারেনি।
কিন্তু পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে কেরলের নাম থাকলেও বাংলার নাম নেই কেন? তা হলে কি বাংলার ফলাফল নিয়ে পলিটব্যুরোর কোনও ‘হতাশা’নেই? দল কি ধরেই নিয়েছিল তাদের বাংলার এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে? রাজ্য সিপিএমের এক নেতার কথায়, ‘পলিটব্যুরোর বিবৃতিতে বাংলার যে উল্লেখ নেই, এটা গুরুত্ব হারানোর লক্ষণ।’ এখন পলিটব্যুরোয় বাংলা থেকে তিন জন সদস্য রয়েছেন। মহম্মদ সেলিম, রামচন্দ্র ডোম এবং সূর্যকান্ত মিশ্র। বয়সবিধিতে পরের বার সূর্যকান্তের বাদ পড়ার কথা। রাজ্য সিপিএমের ওই নেতার আশঙ্কা, পরের বার পার্টি কংগ্রেসে পলিটব্যুরোয় বাংলার ‘কোটা’ কমে যেতে পারে। সূর্যকান্তের বদলে কাউকে না-ও নেওয়া হতে পারে।