এক সময় উত্তরপ্রদেশের অমেঠী লোকসভা কেন্দ্র কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত ছিল। তবে ২০১৯ সালে রাহুল গান্ধীকে হারিয়ে ওই আসন থেকে জয় পেয়েছিলেন স্মৃতি ইরানি। পাঁচ বছর পর হাত শিবির সেই হারানো গড় পুনরুদ্ধার করল কিশোরীলাল শর্মার হাত ধরে!
প্রসঙ্গত, অমেঠীর সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সম্পর্ক অনেক পুরনো। ১৯৭৭ সালে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের এই আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন রাজীব গান্ধীর ভাই সঞ্জয়। দিল্লির মসনদে তখন ইন্দিরা গান্ধীর সরকার। তবে তাঁর গদি ছিল টলমল। দেশ জুড়ে বইতে শুরু করে ইন্দিরা-বিরোধী হাওয়া। সেই হাওয়ায় ধাক্কা খান সঞ্জয়। হেরে যান তিনি। তবে তিন বছর পর ১৯৮০-র লোকসভা ভোটে অমেঠীর সাংসদ হয়েছিলেন সঞ্জয়।
বিমান দুর্ঘটনায় সঞ্জয়ের অকালমৃত্যুর পরে ১৯৮১-র উপনির্বাচন হয় অমেঠীতে। সেই নির্বাচনে জয় পান রাজীব। ১৯৯১ সালের লোকসভা ভোটপর্বের মাঝে এলটিটিই-র মানববোমায় রাজীবের মৃত্যুর পরে অমেঠী থেকে কংগ্রেস রাজীব-ঘনিষ্ঠ সতীশ শর্মাকে প্রার্থী করে। জয় পান তিনি। এর পরে ১৯৯৬-এর ভোটে অমেঠী থেকে সতীশ জিতলেও ১৯৯৮ সালে হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছর পর আবার হাওয়া বদলাতে শুরু করে অমেঠীতে।
১৯৯৯ সালে অমেঠীতে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী রাজনীতিতে পদার্পণ করেছিলেন রাজীব-পত্নী সোনিয়া গান্ধী। তার পর থেকে এই কেন্দ্রে টানা জয় পেয়েছে কংগ্রেস। ১৯৯৯ সালে অমেঠীতে সোনিয়ার ‘ইলেকশন ম্যানেজার’ ছিলেন কিশোরীলাল। তার পর থেকে অমেঠী রাজনীতিতে ক্রমশ উজ্জ্বল হতে থাকেন তিনি। সোনিয়ার পর অমেঠী থেকে লড়েন রাহুল। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস জয় পেয়েছে।
কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের বিরুদ্ধে এই আসনে জয় পান বিজেপির স্মৃতি। ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে অমেঠীতে জয়ী বিজেপি প্রার্থী স্মৃতির সঙ্গে পরাজিত রাহুলের ব্যবধান ছিল ৫৫ হাজারেরও বেশি। তাই এ বার এই কেন্দ্রে রাহুল প্রার্থী হবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। প্রায় শেষ লগ্নে এই কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করে কংগ্রেস। রাহুল নয়, সেই কিশোরীলালের উপরই দায়িত্ব দেয় হাত শিবির। রাহুল তাঁর মা সনিয়ার ছেড়ে যাওয়া আসনে প্রার্থী হন।