এবার বিজেপির মাস্টারস্ট্রোক ছিল লোকসভা ভোটের আগে রামমন্দির নির্মাণ। এর পাশাপাশি ৩৭০ ধারা বিলুপ্তি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবিও ছিল। ‘এক দেশ এক ভোট’, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরের অঙ্গীকার ছিল। ছিল ‘৪০০ পার’ স্লোগান কার্যকরের লক্ষ্য। কিন্তু অষ্টাদশ লোকসভার ফল জানিয়ে দিল, এই প্রথম বার সহযোগীদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে সরকার গড়তে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। ‘পদ্মে’র নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার পথ আটকাতে সফল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।
প্রসঙ্গত, ৫৪৫ আসনের (দু’টি মনোনীত আসন-সহ) লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ২৭৩টি। বিজেপি একক ভাবে জিততে চলেছে ২৪১টি। তাদের নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ ২৯৩। অন্য দিকে, এই লোকসভা নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে কার্যত পুনরুত্থান হল কংগ্রেসের। তারা পেতে চলেছে ৯৯টি আসন। ‘ইন্ডিয়া’র ঝুলিতে ২৩৩। বিরোধী দলনেতার পদের জন্য লোকসভায় ৫৫টি আসনে জেতা প্রয়োজন। কিন্তু ২০১৪-য় ৪৪ এবং ২০১৯-এ ৫২টি আসনে জেতা কংগ্রেস সংসদীয় বিধি অনুযায়ী সেই মর্যাদা পায়নি। এবার সেই মর্যাদা পেতে চলেছে শতাব্দী প্রাচীন দল।
জনসংখ্যার নিরিখে দেশের তিন বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং বাংলায় পরাস্ত হয়েছ বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেসের জোট, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস-শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে)-এনসিপি (শরদ পাওয়ার)-এর ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’ ধাক্কা দিয়েছে মোদীর দলকে। বাংলায় সেই ‘দায়িত্ব’ একা পালন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। মাত্র এক বছর আগে গড়ে ওঠে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তির যৌথমঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স)-র ফল যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।