শনিবার দেশজুড়ে সম্পন্ন হয়েছে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম তথা শেষ দফার ভোটগ্রহণ পর্ব। বাংলার নয়টি-সহ মোট দেশের ৫৭ আসনে ভোটগ্রহণ হয়। এরপরই শুরু হয়েছে বুথ ফেরত সমীক্ষা। বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা তাদের এক্সিট পোল নিয়ে হাজির হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিততে পারে বিজেপি। কিন্তু কতটা এক্সিট পোল বা বুথ ফেরত সমীক্ষা কতটা সঠিক, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ৪ঠা জুন পর্যন্ত। ২০০৪ সালে এক্সিট পোল সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত হয়েছিল। দাবি করা হয়েছিল যে কংগ্রেস নির্বাচনে জিতবে না। প্রায় সব এক্সিট পোলেই দাবি করা হয়েছিল যে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি। সেবার এনডিএ ২০০টি আসনও পায়নি। সেবার এসপি ও বিএসপির সমর্থনে কেন্দ্রে সরকার গঠন করেছিল কংগ্রেস। এরপর ২০০৯ সালেও বিভিন্ন সংস্থার সমীক্ষায় বলা হয়েছিল ইউপিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। বলা হয়েছিল, এইপিএ ১৯৯টি আসন এবং এনডিএ ১৯৭টি আসন পাবে। কিন্তু সেবার ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায়, ইউপিএ ২৬২টি আসন পেয়েছিল। এবং এনডিএ পেয়েছিল ১৫৯টি আসন। এমনকী বিদেশেও ব্রিটেনের ব্রেক্সিট বা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের ক্ষেত্রে পূর্বাভাস মেলেনি একেবারেই।
এবিষয়ে পরিসংখ্যানবিদেরা জানাচ্ছেন, যে কোনও সমীক্ষার ক্ষেত্রেই সামান্য কয়েকজন মানুষের মতামত নিয়ে সকলের মনোভাব বোঝার চেষ্টা হয়। সেই সামান্য কিছু লোককে এমন ভাবে বেছে নেওয়া হয়, যাতে তার মধ্যে গোটা সমাজের প্রতিনিধিত্ব থাকে। কিন্তু বুথ ফেরত সমীক্ষার ক্ষেত্রে তা মানা যায় না। দ্বিতীয়ত, এই সমীক্ষায় কোন দল কত শতাংশ ভোট পাবে, তার হিসেব কষা হয়। তার থেকে আসন ভিত্তিক পূর্বাভাস হয়। কিন্তু একটা দলের ভোট সব আসনে সমান ভাবে ছড়িয়ে থাকে না। তা ছাড়া এ দেশে কেউ ৩০ শতাংশ বা তার থেকেও কম ভোট পেয়ে জিতে যেতে পারেন। পাশাপাশি, কত শতাংশ ভোট এক দলের ভাঁড়ার থেকে আর এক দলের ভাঁড়ারে যাবে, তার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে। আর তা যে সব সময় যে একটি দলেরই পক্ষে যাবে, তাও নিশ্চিত নয় একেবারেই।