ঘূর্ণিঝড়ের রেমালের দাপটে বিপর্যস্ত রাজ্যের একাধিক জেলা। এই দুর্যোগের জেরে বাংলায় আটজনের মৃত্যু হল। রবিবার রাতে, বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে মারা গিয়েছিলেন মহম্মদ সাজিদ। পূর্ব বর্ধমানে মৃত্যু হয়েছে বাবা-ছেলের। হাওড়া, বীরভূম, পানিহাটি, মহেশতলা ও সুন্দরবনে রেমালের জেরে প্রাণ গিয়েছে দুই মহিলা-সহ পাঁচজনের। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর অনুযায়ী, আজ, মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। উল্লেখ্য, বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বেঁচেছে সুন্দরবন। নদীবাঁধ উঁচু হাওয়া বাঁধ ভেঙে জল গ্রামে প্রবেশ করতে পারেনি। প্রশাসনও তৎপর ছিল। “গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাতভর মনিটরিং করেছি। ভোটের কাজের মধ্যেও সরকারি কর্মীরা মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করেছেন। যাদের সব চলে গিয়েছে, কথা দিচ্ছি প্রশাসন যা উদ্যোগ নেওয়ার নেবে। আপনারা চিন্তা করবেন না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আমি এরিয়াল সার্ভে করব”, জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাশাপাশি, কাকদ্বীপ, নামখানা, সাগরে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। গণপরিবহণ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। দোকানপাট বন্ধ ছিল। জনজীবন বিকেলে স্বাভাবিক হতে থাকে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে ১৩ হাজার গাছ উপড়েছে, আড়াই হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। ২৫ হাজার বাড়ি আংশিক ভেঙেছে। যাঁদের বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে, তাঁরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাবেন। পূর্ব বর্ধমানের কলানবগ্রামে কলাগাছ কাটতে গিয়ে প্রাণ হারান বাবা-ছেলে। কলাগাছের উপর দিয়ে গিয়েছিল হুকিংয়ের তার। তার ছিঁড়েই মারা যান ফড়ে সিংহ ও তরুণ সিংহ। বীরভূমের পাইকরের জাজিগ্রামে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে প্রসেনজিত লাহা নামে এক যুবক মারা গিয়েছে। মৌসুনি দ্বীপের বাগডাঙায় রান্নাঘরের উপর গাছ ভেঙে মৃত্যু হয়েছে রেণুকা মণ্ডলের। পানিহাটির সুখচর এলাকার রাজা রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গোপাল বর্মন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। হাওড়ার লিলুয়ায় বাড়ি ঢোকার সময় কলিং বেল থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় প্রসেনজিৎ গুহ নামের এক ব্যক্তি। মহেশতলার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে নুঙ্গি মেটেপাড়ায় বাড়ির সামনে জমা জলে তড়িদাহত হয়ে প্রাণ তাপসী দাস নামের এক মধ্যবয়স্কা।