লোকসভা ভোটপর্ব চলাকালীন নরেন্দ্র মোদী বুক ফুলিয়ে ঘোষণা করেছেন, আগামী ৪ জুন ফলাফল ঘোষণার পর শেয়ার বাজার অনেকটা চাঙ্গা হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আবার আরও এক কদম এগিয়ে ঘোষণা করেছেন, ‘৪ জুনের আগে শেয়ার কিনে রাখুন। কারণ, ভোটের ফল প্রকাশ হলেই শেয়ারের দর চড়চড়িয়ে বাড়বে।’ শেয়ার বাজার নিয়ে মোদী-শাহর এ হেন ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত অর্থনীতিবিদরা।
মঙ্গলবার বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অখিল স্বামী বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতারা কি শেয়ার বাজারের দালাল? তা না হলে তাঁরা এমন মন্তব্য করবেন কেন? সাধারণ মানুষ তাঁদের কষ্টের রোজগারের টাকা শেয়ার বাজারে বা মিউচুয়াল ফান্ডে রাখেন ভালো রিটার্ন লাভের আশায়। ৪ জুনের পর যদি শেয়ার বাজারে ধস নামে, তাহলে তারা বিরাট আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তার দায় কি নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ নেবেন? শুধু তা-ই নয়, আরও এক ধাপ এগিয়ে স্বামী জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর বাজার চাঙ্গা করার এই গ্যারান্টিও স্রেফ ‘জুমলা’!
শহরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে অখিল স্বামী বলেন, ‘কিসের ভিত্তিতে এসব বলেছেন একজন দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী? তাঁর কথায় যদি সাধারণ মানুষ শেয়ার কিনে রাখেন এবং ৪ জুনের পর তার দর কমে যায়, তাহলে কোন আদালতে তাঁরা বিচার চাইতে যাবেন? এসব কথা তো ব্রোকার বলে থাকে।’ অনুষ্ঠানে হাজির বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দে বলেন, ‘শেয়ারবাজারে যে অস্থিরতা চলছে এবং শেয়ার সংক্রান্ত যে তথ্য বাজারে ছড়াচ্ছেন মোদী-শাহ, তা দেশের অন্যতম বড় দুর্নীতি হতে চলেছে।’
স্বামীর ব্যাখ্যা, অনেক ক্ষেত্রেই মুনাফা লোটার কারণে বাজারে ভাল বা মন্দ তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ভালো তথ্যের ভিত্তিতে শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। বড় কারবারিরা সেই সময় শেয়ার বেচে বড় অঙ্কের মুনাফা ঘরে তোলেন। এরপর মন্দ তথ্য ছড়িয়ে বাজারে ধস নামানো হয়। তখন ওই কম দামে বিক্রি করা শেয়ার কিনে নেন। এই অসাধু কারবার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া বা সেবি আছে। মোদী-শাহ যেভাবে বাজার চাঙ্গা হওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেবে না সেবি? সেই প্রশ্নও তুলেছেন স্বামী।