প্লে-অফেও অব্যাহত কলকাতা নাইট রাইডার্সের দাপট। মঙ্গলবার আহমেদাবাদে প্রথম কোয়ালিফায়ারে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে উড়িয়ে দিয়ে চতুর্থ বারের মতো আইপিএলের ফাইনালে পৌঁছে গেল নাইটরা। ২০২১ সালের পর আবার আইপিএল ফাইনালে উঠল কেকেআর। এদিন হায়দরাবাদকে ৮ উইকেট হারিয়ে দিলেন শ্রেয়সরা। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জ্বলে উঠলেন কেকেআরের অজি পেসার মিচেল স্টার্ক। প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট নিয়ে কেকেআরকে চালকের আসনে তিনি। হায়দরাবাদের ১৫৯ রানের জবাবে মাত্র ১৩.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে গেল কলকাতা। এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক কামিন্স। কোয়ালিফায়ারে ব্যর্থ হল ট্রেভিস হেড-অভিষেক শর্মার ওপেনিং জুটি। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই হেডের (০) স্টাম্প ছিটকে দেন স্টার্ক। দ্বিতীয় ওভারে অভিষেককে (৩) আউট করেন বৈভব অরোরা। ১৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে চাপে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। স্টার্ক প্রতিপক্ষকে আরও কোণঠাসা করে দেন নিজের তৃতীয় ওভারে। শেষ দু’বলে পর পর আউট করলেন নীতীশ কুমার রেড্ডি (৯) এবং শাহবাজ আহমেদকে (০)। ৩৯ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর হায়দরাবাদকে লড়াইয়ে ফেরান তিন নম্বরে নামা রাহুল ত্রিপাঠী এবং ছ’নম্বরে নামা হেনরিখ ক্লাসেন। পঞ্চম উইকেটে জুটিতে আগ্রাসী মেজাজে তাঁরা তুললেন ৬২ রান। এরপর শ্রেয়স আক্রমণে আনেন বরুণ চক্রবর্তীকে। তাঁর বলে পরাস্ত হন ক্লাসেন (২১ বলে ৩২)। জুটি ভাঙার পর আবদুল সামাদের সঙ্গে ভুল-বোঝাবুঝিতে রান আউট হলেন রাহুলও। ৩৫ বলে ৭টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে ৫৫ রান করে আউট হন তিনি। এর পর আর হায়দরাবাদ তেমন রান তুলতে পারেনি। আবদুল সামাদ করেন ১২ বলে ১৬। শেষ দিকে ২টি করে চার এবং ছয়ের সাহায্যে কামিন্সের ২৪ বলে ৩০ রানের ইনিংস হায়দরাবাদকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেয়। ৩ বল বাকি থাকতে ১৫৯ রানে শেষ হয় হায়দরাবাদের ইনিংস।
এদিন কেকেআরের সব বোলারই উইকেট পেয়েছেন। সফলতম স্টার্ক ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিলেন। ২৬ রানে ২ উইকেট বরুণের। ১৫ রানে ১ উইকেট রাসেলের। ১৭ রানে ১ উইকেট বৈভবের। ২৭ রানে ১ উইকেট নিলেন হর্ষিত রানা। ৪০ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট গেল নারাইনের ঝুলিতে। জয়ের জন্য ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই ছিল সাবলীল ছন্দে ছিল নাইটরা। নারাইন-রহমানুল্লাহ গুরবাজের নতুন ওপেনিং জুটিও ভরসা দিলেন দলকে। আফগান উইকেটরক্ষক-ব্যাটার করলেন ১৪ বলে ২৩ রানের ইনিংস। ২টি চার এবং ২টি ছক্কা এল তাঁর ব্যাট থেকে। নারাইন করলেন ১৬ বলে ২১। ৪টি চার মারলেন তিনি। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেললেন বেঙ্কটেশ আয়ার, শ্রেয়সও। কামিন্সেরা তাঁদের সমস্যায় ফেলতে পারলেন না একেবারেই। বেঙ্কটেশ ২৮ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকলেন। মারলেন ৫টি চার এবং ৪টি ছক্কা। শ্রেয়সও ৫টি চার, ৪টি ছক্কার সাহায্যে খেললেন ২৪ বলে ৫৮ রানের অপরাজিত ইনিংস। হায়দরাবাদের বোলারদের মধ্যে সফলতম নটরাজন। ২২ রানে ১ উইকেট নিলেন তিনি। ৩৮ রান খরচ করে ১ উইকেট পেলেন কামিন্স। আর কোনও বোলার উইকেট পেলেন না। ম্যাচের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে মিচেল স্টার্ককে। তবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে গেলেও আইপিএলের ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ আছে হায়দরাবাদের সামনে। বুধবার এলিমিনেটরে রাজস্থান রয়্যালস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মধ্যে বিজয়ী দলের সঙ্গে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলবেন কামিন্সেরা। সেই ম্যাচ জিতলে ফাইনালে আবার কেকেআরের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পাবে সানরাইজার্স।