দেশজুড়ে চলছে লোকসভা নির্বাচন। সোমবার সম্পন্ন হল পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ পর্ব। ভোট যতই এগোচ্ছে, ততই দুশ্চিন্তা মাথাচাড়া দিচ্ছে বঙ্গ বিজেপির। বারবার বেআব্রু হয়ে পড়ছে দলের সংগঠনের দুর্দশা। তারকা প্রচারক হিসাবে বাংলায় এসেছিলেন, প্রতিবেশী দুই বিজেপিশাসিতরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় দলীয় প্রার্থীর প্রচারে এসে মঞ্চের পাশেই তিনি বসে রইলেন কয়েক ঘণ্টা। নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা পরে সভাস্থলে এসেও আরেকজন দেখলেন, চেয়ার তখনও ভরেনি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহারা মাঠ ভরাতে পারছেন না। বাংলার কতগুলি আসনে এবার পদ্ম ফুটবে, তা নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিজেপি নেতারা। গুমায় বারাসতের বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদারের সমর্থনে সভা করতে এসেছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। কপ্টার থেকে নেমে ঘন্টাখানেক মঞ্চের পাশে বসে রইলেন তিনি। জমায়েতের হাল দেখে সংগঠন নিয়ে বিরক্তি ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। এরপর তাঁর সভা ছিল বসিরহাট লোকসভার সন্দেশখালিতে। সেখানেও মাঠ ভরাতে হিমশিম খেতে হয় পদ্ম পার্টিকে। মঞ্চের সামনের অংশ কিছুটা ভরলে বক্তব্য দিতে ওঠেন তিনি। তীব্র সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক ভাষণ দেন হিমন্ত।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি ৩০০ আসন পাওয়ায় রামমন্দির হয়েছে। ৪০০ আসন পেলে জ্ঞানবাপী মন্দির তৈরি হবে।” সুর চড়িয়ে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হয়ে একদিনে ৭০০ মাদ্রাসা বন্ধ করেছেন তিনি। এদিন সভার পর অব্যবস্থা নিয়ে বিজেপি কর্মীরাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। হিমন্তের বিভিন্ন মন্তব্য যে কর্মীরাই ভালভাবে নেননি, তা খোদ বিজেপি কর্মীরাই জানিয়েছেন। আরেক মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরার মানিক সাহার জনসভা ছিল পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে, নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা পর সভাস্থলে আসেন তিনি। মঞ্চের সামনের সব চেয়ার ফাঁকা থাকায় তিনটে নাগাদ সভা শুরু হয়। আরও এক ঘণ্টা পর ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী আসেন। তখনও সামনের বেশিরভাগ চেয়ার খালি ছিল। তিনি বলেন, বিজেপি রাজ্যে ৩২টি আসন পাওয়ার লক্ষ্য রেখেছে। ওই সভাতেই এক বিজেপি নেতা আবার ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা দাবি করেন। সন্ধ্যায় তিনি রায়দিঘি বাসস্ট্যান্ডে আরও একটি সভা করেন। তাতেও জনগণের সাড়া ছিল তথৈবচ। ফলত ভোটের আবহ এমন দৃশ্য যে গেরুয়া-নেতৃত্বের মাথাব্যথা বাড়াবে, তা বলাই বাহুল্য।