২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি জিতেছিল ৭১ আসনে। ২০১৯ সালে সেই আসন কমে দাঁড়ায় ৬২তে। এ যাত্রায় ৮০টি আসনের লক্ষ্য নিয়ে ঝাঁপালেও, উত্তরপ্রদেশে প্রথম চার দফায় দল যে বেশ কিছু জেতা আসন হারাতে চলেছে, সে বিষয়ে বিজেপি নেতৃত্ব এক রকম নিশ্চিত। এমনকী আগামী তিনটি পর্বে নতুন করে আসন জিতে ঘাটতি মেটানো দূরে থাক, জেতা আসন ধরে রাখাই প্রধান লক্ষ্য বিজেপি নেতৃত্বের।
আগামী সোমবার বুন্দেলখণ্ড ও মধ্য উত্তরপ্রদেশে ১৪টি আসনে নির্বাচন হতে চলেছে। পাঁচ বছর আগে ওই ১৪টি আসনের মধ্যে রায়বরেলী ছাড়া বাকি সব ক’টিতেই জিতেছিল বিজেপি। বাকি দু’টি পর্বে যে ২৭টি আসন পড়ে থাকছে, সেখানে বিজেপি ও তার শরিক দলগুলি মোট ২৩টি আসন জিতেছিল। বাকি চারটি আসন পেয়েছিল মায়াবতীর দল বিএসপি। সব মিলিয়ে বাকি থাকা ৪১টি আসনের মধ্যে পাঁচ বছর আগে পদ্মশিবির জেতে ৩৬টি আসনে। ফলে ওই এলাকায় নতুন করে ভাল ফল করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।
উপরন্তু এবারে দেশের অন্য প্রান্তের মতোই মোদী ঝড়ের কোনও অস্তিত্ব নেই যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে। সুতরাং বুন্দেলখণ্ড ও পূর্বাঞ্চলে দলের ফল কেমন হবে, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন বিজেপি নেতৃত্ব। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের অন্তত ২০টি লোকসভায় জয়ের ব্যবধান ১০ হাজারেরও কম ছিল। সেই আসনগুলিতে মোদী ঝড়ের অভাবে দলীয় প্রার্থীরা নিজের ক্যারিশ্মায় কতটা ভোট টানতে পারেন, তার ওপরে ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করছে।
তা ছাড়া পাঁচ বছর আগে বিজেপিকে অনেকটাই স্বস্তি দিয়ে উত্তরপ্রদেশের ৩৭টি আসনে প্রার্থী দেয়নি বিএসপি। ফলে গত লোকসভা নির্বাচনে দলিত ও জাটভ ভোটের একটি বড় অংশ বিজেপির প্রার্থীর ঘরে পড়ে। কিন্তু এ পর্বে দলিত সমাজের বড় অংশ মুখ ফিরিয়েছেন বিজেপি থেকে। তা ছাড়া বিজেপির চারশো আসন পেলে সংবিধান পরিবর্তন করে সংরক্ষণ তুলে দিতে পারে, বিরোধীদের ওই প্রচারও প্রভাবিত করেছে দলিত সমাজকে।
বিজেপির কাছে বাড়তি চ্যালেঞ্জ হল পূর্বাঞ্চলে মায়াবতীর মোকাবিলা করা। গত বার মোদী ঝড় থাকা সত্ত্বেও পূর্বাঞ্চলে চারটি আসন দখল করে নিয়েছিল মায়াবতীর দল। এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। মোদী ঝড় তো নেই-ই, উল্টে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া সর্বত্র। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিভাজনের রাজনীতিও এবারের ভোটে সে ভাবে হাওয়া তুলতে ব্যর্থ। উল্টো দিকে নানাবিধ কারণে যাদব ভোটের মতো বিজেপির হাতছাড়া হতে পারে দলিত ভোটও। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঙ্ঘবদ্ধ ওই দলিত ভোট অনেক হিসেব গুলিয়ে দিতে পারে।