খেলা হল না একটি বলও। সোমবার গুজরাতের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে শুরুই করা গেল না ম্যাচ। বৃষ্টিতে বাতিল হল ম্যাচ। বৃষ্টি থামলেও সোমবার খেলা শুরু করা সম্ভব হত কি না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। গত শনিবার কলকাতায় বৃষ্টি থামার কিছুক্ষণ পরেই খেলা শুরু হয়ে যায় ইডেনে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে তেমন সম্ভাবনা ছিল বলে মনে করছে না ওয়াকিবহাল মহল। এদিন আহমেদাবাদে আইপিএলের ম্যাচ ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং গুজরাত টাইটান্সের মধ্যে। কিন্তু সেখানে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। বাজ পড়ে। এরপর মাঠের আলো নিভিয়ে রাখা হয়। কখনও বৃষ্টি থামছিল, কখনও জোরে পড়ছিল, কখনও আবার হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও আহমেদাবাদের মাঠ পুরো ঢাকার ব্যবস্থা করা গেল না। গত বছর আইপিএল ফাইনালের পরেও শিক্ষা নেয় আমদাবাদ। প্রায় ৮০০ কোটি টাকা খরচ করে স্টেডিয়াম বানানো হলেও সেখানকার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে থেকে গেল সংশয়। কলকাতার মাঠে দেখা গিয়েছে, বৃষ্টি হলেই পুরো মাঠ ঢেকে ফেলা হয়। এর ফলে বৃষ্টি থামার পর পরই খেলা শুরু করে দেওয়া সম্ভব হয়। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান বনাম ভারত ম্যাচ হয়েছিল ইডেনে। সে বার বৃষ্টি শেষ হওয়ার পরেই খেলা শুরু করা সম্ভব হয়েছিল। সাদা আস্তরণে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল মাঠ। জল মাঠে পড়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। ২০১৫ সালে বাংলার ক্রিকেট সংস্থার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর হাত ধরেই ইডেনের এই পরিবর্তন। পুরো মাঠ ঢেকে ফেলার ব্যবস্থা করেন তিনিই। ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে আসেন এই আস্তরণ। বদলে দেন নিকাশি ব্যবস্থাও। কিন্তু আমদাবাদে তা নেই। পিচ ঢাকার পর আরও একটি আস্তরণ দেওয়া হয় তার উপর, কিন্তু তাতে ঢাকা পড়ে মাঠের খুব সামান্য অংশ।
উল্লেখ্য, গত বছর আইপিএল ফাইনাল ছিল এই মাঠে। সেই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল গুজরাত এবং চেন্নাই সুপার কিংস। সে দিনও বৃষ্টি হয়েছিল। রবিবার খেলাই হয়নি। পরের দিন ম্যাচ শুরু হয়েছিল। সেটাও অনেক দেরিতে। কিন্তু তার পরেও যে অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি, তার প্রমাণ পাওয়া গেল সোমবার। যে মাঠ তৈরি করতে ৮০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল, সেই স্টেডিয়ামে এমন অবস্থা দেখে বিরক্ত দর্শকেরা। গত বছর স্টেডিয়ামের ছাদ ফুটো হয়ে জল পড়তেও দেখা গিয়েছিল। সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিও দেখা গিয়েছে। সেখানে দেখা যায় স্টেডিয়ামের ছাদ ফুটো হয়ে জল পড়ছে। আর সেই জলে ভেসে যাচ্ছে দর্শকাসন। জনৈক দর্শক সেই ভিডিও টুইট করে লেখেন, “যাঁরা ছাদে ঘেরা স্টেডিয়ামের আশা করছেন, তাঁরা দেখুন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডের সবচেয়ে ভাল স্টেডিয়ামে কী অবস্থা।” সেই ভিডিওয় এক সমর্থক লিখেছেন, “খুব খারাপ অভিজ্ঞতা স্টেডিয়ামের ভিতরে এবং বাইরে। পার্কিংয়ের এলাকায় কাদা ভর্তি এবং সুইমিং পুলের মতো জল।” এবারে অবশ্য তেমন কিছু দেখা যায়নি। সোমবার টসের আগে থেকেই বৃষ্টি পড়ছিল আহমেদাবাদে। কখনও বৃষ্টি থামে, কখনও তা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে চলে বজ্রপাত। তার মধ্যে খেলা শুরু করা সম্ভব ছিল না। সেই কারণেই ম্যাচ বাতিল করে দেওয়া হয়। যদিও খেলা বাতিল ঘোষণা করার আগে দীর্ঘ আলোচনা চলে ম্যাচ রেফারি, আম্পায়ার এবং দুই দলের কোচ, অধিনায়কদের। এক সময় পিচের কভারও সরানো হয়। কিন্তু মাঠের বিভিন্ন জায়গায় তখন জল জমে। ১০:৫৬ মিনিটের মধ্যে খেলা শুরু করতে হয়। তা সম্ভব ছিল না। ফলত আম্পায়াররা ম্যাচ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন।