টানা তিন ম্যাচে হারতে হল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে। মঙ্গলবার হার্দিকদের চার উইকেটে হারিয়ে প্লে-অফের দৌড়ে নিজেদের জায়গা পোক্ত করল লখনউ সুপার জায়ান্টস। আপাতত লিগ টেবলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে তারা। এদিন টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন লখনউয়ের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। শুরু থেকেই উইকেট হারাতে শুরু করে মুম্বই। দ্বিতীয় ওভারে মহসিন খানের বলে ৪ রানের মাথায় আউট হন রোহিত। পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন সূর্যকুমার যাদব। তিনি করেন ১০ রান। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে আরও দু’টি উইকেট হারায় মুম্বই। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে রান আউট হন তিলক বর্মা। এই পরিস্থিতিতে দলকে সামলানোর দায়িত্ব ছিল হার্দিকের কাঁধে। নবীন উল হকের পরের বলেই শূন্য রানে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। ২৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে মুম্বই। পাওয়ার প্লে-র পরে ইনিংস সামলানোর কাজ শুরু করেন ঈশান কিশন ও নেহাল ওয়াধেরা। রানের গতি কম থাকলেও উইকেট হারাননি তাঁরা। অর্ধশতরানের জুটি হয় তাঁদের। এরপর রবি বিষ্ণোইয়ের বলে বড় শট মারতে গিয়ে ৩২ রানে ফেরেন ঈশান। হাত জমে যাওয়ার পরে শেষ দিকে কয়েকটি বড় শট খেলেন ওয়াধেরা। অর্ধশতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু নিজের দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম বলেই তাঁকে বোল্ড করেন মহসিন। ৪৬ রান করে আউট হন ওয়াধেরা। সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করেন টিম ডেভিড। পেসারদের গতির ব্যবহার করে বড় শট খেলেন তিনি। লখনউয়ের উইকেটে বড় শট খেলা ততটা সহজ নয়। ডেভিড তা করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকায় সাহায্য পাচ্ছিলেন না তিনি।
এদিন ডেথ ওভারেও আঁটোসাঁটো বল করে লখনউ। নিজের শেষ ওভারের প্রথম বলে মহম্মদ নবিকে আউট করে উঠে যান মায়াঙ্ক যাদব। আর বল করেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান করে মুম্বই। ডেভিড ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন। রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই শূন্য রানে ফেরেন এই ম্যাচে অভিষেককারী আর্শিন কুলকার্ণি। পাওয়ার প্লে-র শুরুটা ভাল করেছিলেন মুম্বইয়ের বোলারেরা। সেই সময় সাবধানে খেলেন রাহুল ও মার্কাস স্টোয়নিস। পাওয়ার প্লে’র শেষ দুই ওভারে হাত খোলেন তাঁরা। রাহুল ও স্টোয়নিসের মধ্যে ৫৮ রানের জুটি তৈরি। এরপর নিজের প্রথম ওভারেই ২৮ রানের মাথায় রাহুলকে আউট করেন হার্দিক। তবে খুব একটা সমস্যা হয়নি না লখনউয়ের। উইকেট ধরে খেলার চেষ্টা করছিল তারা। স্টোয়নিস ও দীপক হুদার মধ্যেও জুটি হয়। দৌড়ে রান নিচ্ছিলেন তাঁরা। মাঝেমধ্যে খারাপ বলে বড় শট আসছিল। সময় যত গড়াচ্ছিল, তত জয়ের দিকে এগোচ্ছিল লখনউ। বাধ্য হয়ে নিজের তুরুপের তাস যশপ্রীত বুমরার হাতে বল তুলে দেন হার্দিক। বুমরার বলে ঝুঁকি নেয়নি লখনউ। বুদ্ধি করে খেলছিলেন দুই ব্যাটার। এরপর হার্দিকের বলে বড় শট মারতে গিয়ে ১৮ রান করে আউট হয়ে যান হুদা। অপর প্রান্তে থাকা স্টোয়নিস অর্ধশতরান করেন। তিনি থাকায় কোনও অবস্থাতেই খেলা লখনউয়ের হাতের বাইরে যায়নি। ১৪তম ওভারে হাত খোলা শুরু করেন স্টোয়নিস। মহম্মদ নবিকে একটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। আরও একটি ছক্কা মারতে গিয়ে ৬২ রানের মাথায় আউট হন স্টোয়নিস। তবে খেলা ততক্ষণে লখনউয়ের হাতে চলে এসেছে। ধীরে ধীরে জয়ের দিকে এগোয় তারা। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় লখনউ। ম্যাচের সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে মার্কাস স্টোয়নিস।