একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারের শীতলকুচিতে ভোটের সময় গন্ডগোলের জেরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গুলিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেসময় জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলেন দেবাশিস ধর। ঘটনার জেরে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে দেবাশিস ধর বীরভূমে বিজেপির প্রার্থী হন। কিন্তু তাঁর মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় বীরভূম থেকে বিজেপির নয়া প্রার্থী হয়েছেন দেবতনু ভট্টাচার্য। আর রাতারাতি এই কাণ্ড হওয়ায় প্রার্থী নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের মধ্যে।
পরিস্থিতি এমনই যে অবশেষে মঙ্গলবার মহম্মদবাজার ব্লকের আঙ্গারগড়িয়ায় দেবতনুর সমর্থনে দেওয়াল লিখনে নামেন দলের কর্মী ও সমর্থকেরা। যেখানে দেবতনু মনোনয়ন জমা দিয়েছেন গত বৃহস্পতিবার। সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের তেঁতুলতলা এলাকায় আবার দেখা গিয়েছে, পাশাপাশি দু’টি দেওয়ালে দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন করে ভোট দেওয়ার ডাক দেওয়া হলেও দেখা গিয়েছে এক দেওয়ালে নাম রয়েছে দেবাশিস ধরের। অন্য দেওয়ালে দেবতনু ভট্টাচার্যের। এর থেকেই স্পষ্ট শেষ মুহূর্তে দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পরে বীরভূম জেলা বিজেপির ঠিক কতটা ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থায় রয়েছে।
নতুন প্রার্থী দেবতনুর নামে দেওয়াল লিখন শুরু হয়নি বললেই চলে। এখনও বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের দেওয়ালে দেওয়ালে জ্বলজ্বল করছে পুরনো প্রার্থী দেবাশিসের নাম। দেবাশিস আবার মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ। সে মামলার ফল কী হবে, তা নিয়ে চর্চা চলছে। সব মিলিয়ে জেলার বিজেপি কর্মীরা বিভ্রান্ত। কী করবেন, কে চূড়ান্ত প্রার্থী, বুঝতে পারছেন না তাঁরা। এমন ঘটনায় ভোটারেরাও বিভ্রান্ত হবেন বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ।
বীরভূমের এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘নতুন প্রার্থীর নাম লেখার আগে অন্তত পুরনো প্রার্থীর নামটা মুছে দেওয়া উচিত ছিল। দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার বিজেপির ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতি সন্তোষ ভান্ডারি বলেন, ‘জেলা থেকে কোনও নির্দেশ আসেনি। আদালতের কোনও নির্দেশ হয়নি। তাই আমরা পুরনো দেওয়াল লিখন না মুছে পাশের ফাঁকা জায়গায় দেবতনুদার সমর্থনে দেওয়াল লিখছি।’ দলের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত ২০ দিন ধরে প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় শয়ে শয়ে দেওয়াল লেখা হয়েছে দেবাশিসকে প্রার্থী দেখিয়ে। সেই সব দেওয়াল মুছে নতুন করে দেওয়াল লেখার ঝক্কি এখন কে নেবে?