দেশজুড়ে চলছে লোকসভা নির্বাচনের। ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। আর এমতাবস্থায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়লেন বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। গত মার্চে বিজেপি প্রার্থীর নার্সিংহোমে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতি খুঁজে পেল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তারপরেই এই ঘটনায় সুভাষ সরকারের চিকিৎসক পুত্র সোমরাজ সরকারের বিরুদ্ধে এফআইআর করল পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। জানা গিয়েছে, ওই প্রসূতির নাম মৌসুমী দে। তিনি বাঁকুড়া শহরের কামারপাড়া এলাকার বসিন্দা। প্রসবযন্ত্রণা ওঠায় তাঁকে থানাগোড়া এলাকার ওই বেসরকারি নার্সিংহোমে ভরতি করেন পরিবারের সদস্যরা। গত ২১শে মার্চ তাঁকে ভরতি করা হয়। এরপরেই ওই নার্সিংহোমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মৌসুমী। তাতে স্বাভাবিকভাবেই খুশি হয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। তবে সেই স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সিজারের পর ক্রমেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে মৌসুমীদেবীর। তখন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানায় রোগীর ডায়ালিসিস করতে হবে। আর সেখানেই ঘটে বিপত্তি। কারণ ওই নার্সিংহোমে ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা ছিল না। দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, সুভাষ সরকারের ছেলে ঐ প্রসূতির চিকিৎসা করছিলেন। এরপর প্রসূতিকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, সেখানেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। অবশেষে দুর্গাপুরের নার্সিংহোমে সোমবার মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির। এই ঘটনায় সুভাষ সরকারের নার্সিংহোমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ উগরে দেন পরিবারের সদস্যরা। পরে মৌসুমী দেবীর মৃতদেহ ওই নার্সিংহোমের সামনে রেখে বিক্ষোভ করেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ ছিল, ভুল চিকিৎসার কারণে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। বিজেপি প্রার্থীর নার্সিংহোমে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলের নেতা কর্মীরাও বিক্ষোভে যোগ দেন। পরে এই ঘটনায় বাঁকুড়া সদর থানায় অভিযোগ জানান মৃতার স্বামী তন্ময় দে। এই ঘটনায় বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরও তদন্ত শুরু করে। তদন্তের রিপোর্টে সোমরাজের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতি ধরা পড়েছে। জানা যাচ্ছে, নার্সিংহোমে উপযুক্ত পরিকাঠামো ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছিল। সোমরাজের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা দলের প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জেলা সদর দফতর বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে এফআইআর করেছে পুলিশ। ভোটের মধ্যে এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই মাথাব্যথা বেড়েছে গেরুয়া-নেতৃত্বের।