সোমবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের প্রায় ৩০০ পাতার একটি রায়ে চাকরিচ্যুত হয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশেরই দাবি, স্বচ্ছ ভাবে, মেধার জোরে চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরা৷ ঠিক যেমন বর্ধমানের বাসিন্দা সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়৷
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক সুদীপ্তর বাবা একসময় ভ্যানে মাল টানতেন৷ বাবার সঙ্গে সেই কাজ করতে হয়েছে সুদীপ্তকেও৷ তার সঙ্গে চলেছে পড়াশোনা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই৷ সেই লড়াইয়ে জয়ী হয়েই সরকারি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন বলে দাবি সুদীপ্তর৷ আজও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, যোগ্য মেধা নিয়ে শিক্ষকতা করতে গিয়ে, তার চাকরি চলে গিয়েছে।
এর আগে একটি কলেজে পড়াতেন সুদীপ্ত। তারপর মাদ্রাসাতেও চাকরি পেয়েছিলেন। ২০১৬ চাকরি পান বর্ধমানের কেতুগ্রাম (১) ব্লকের আমগড়িয়া গোপাল পুর আরজিএম ইনস্টিটিউশনে। বাড়িতে বাবা বাবুলাল চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও মা ঝর্না চট্টোপাধ্যায় রয়েছেন। দুজনেই অসুস্থ। ঝরনা হৃদরোগে আক্রান্ত। সুদীপের এক ছেলে(৭) ও এক মেয়ে(১৩)। তারা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে।
বাবা মায়ের ওষুধের পিছনেই মাস গেলে ছয় হাজার টাকা মতো খরচ বলে জানিয়েছেন চাকরি হারানো শিক্ষক। ছেলে মেয়ের পড়াশোনায় মাসে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়।তারপর সংসার চালিয়ে যতটুকু বাঁচে, সেটুকুই সঞ্চয়। উপরন্তু কো অপারেটিভের লোন রয়েছে। হঠাৎ চাকরি চলে যাওয়ায় অথৈ জলে পড়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘মন দিয়ে পড়াশোনা করে নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়ে লাভ কী হল! আবার বোধহয় ভ্যান ঠেলতে হবে!’