রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ হাসি হাসলেন ঋষভই। অল্পের জন্য হারতে হল শুভমনদের। দিল্লী ক্যাপিটালসের কাছে ৪ রানে হেরে গেল গুজরাত। বুধবার টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শুভমন। রান পাননি দিল্লীর টপ-অর্ডারের ব্যাটারেরা। তবু গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ৪ উইকেটে ২২৪ রান তুলে নেয় দিল্লী। চাপের মুখে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন পন্থ। তাঁকে সঙ্গ দিলেন অক্ষর পটেল। তাঁদের লড়াইয়ের সুবাদে শুভমনের দলের সামনে জয়ের জন্য ২২৫ রানের লক্ষ্য রাখে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিল্লী। গুজরাতের ইনিংস শেষ হল ৮ উইকেটে ২২০ রানে। এদিন ঘরের মাঠে রান পেলেন না দিল্লীর দুই ওপেনার পৃথ্বী শ এবং জেক ফ্রেজার ম্যাকগ্রুক। দু’জনকেই আউট করলেন সন্দীপ ওয়ারিয়র। ফ্রেজার করলেন ১৪ বলে ২৩। মারলেন ২টি করে চার এবং ছয়। পৃথ্বীর ব্যাট থেকে এল ৭ বলে ১১। তাঁর আউটেট সিদ্ধান্ত কিছুটা বিতর্কিত। নূর আহমেদ তাঁর দেওয়া ক্যাচ পরিচ্ছন্ন ভাবে ধরেছেন কি না, তা টেলিভিশন রিপ্লেতে পরিষ্কার ভাবে বোঝা যায়নি। তৃতীয় আম্পায়ার আউট দেন। চার নম্বরে নেমে ব্যর্থ হলেন সাই হোপও (৫)।
চাপের মুখে বুক চিতিয়ে লড়াই করলেন অক্ষর। তাঁর ৪৩ বলে ৬৬ রানের ইনিংস ভরসা দিল দিল্লিকে। পিঞ্চ হিটার হিসাবে তাঁকে নামিয়েছিলেন পন্থেরা। দলের আস্থার মর্যাদা দিলেন বাঁ হাতি অলরাউন্ডার। ৫টি চার এবং ৪টি ছয় দিয়ে সাজালেন নিজের ইনিংস। পাশাপাশি দিল্লীর ইনিংসে বাড়তি মাত্রা যোগ করলেন অধিনায়ক পন্থ। বিশেষ করে ইনিংসের শেষ কয়েক ওভারে তাঁকে দেখা গেল চেনা বিধ্বংসী মেজাজে। মোহিত শর্মার শেষ ওভারেই শুধু ব্যাট হাতে তুললেন ৩০ রান। শেষ পাঁচটি বলের চারটিতে মারলেন ছক্কা। একটি চার। শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে ৮৮ রান করে অপরাজিত রইলেন তিনি। অপরাজিত ইনিংসে দিল্লী অধিনায়কের ব্যাট থেকে এল ৫টি চার এবং ৮টি ছক্কা। ট্রিস্টান স্টাবস খেললেন ৭ বলে ২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। মারলেন ৩টি চার এবং ২টি ছক্কা। ১৬ ওভারের শেষে দিল্লীর রান ছিল ১৪৩। মূলত পন্থের দাপটে শেষ চার ওভারে দিল্লী যোগ করল ৮১ রান। দলের ইনিংসকে মজবুত জায়গায় পৌঁছে দিয়ে পন্থ বুঝিয়ে দিলেন আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত তিনি।
এদিন গুজরাতের বোলারদের মধ্যে সফলতম সন্দীপ ৩ উইকেট নিলেন ১৫ রান খরচ করে। ৩৬ রানে ১ উইকেট নুরের। শুভমনের দলের আর কোনও বোলার উইকেট পেলেন না। ৪ ওভারের মোহিত দিলেন ৭৩ রান। ৩৫ রান খরচ করেও উইকেট পেলেন না রশিদ খান। রান তাড়া করতে মেনে শুরুতেই অধিনায়ক শুভমনের (৬) উইকেট হারায় গুজরাত। দলের ইনিংস টানলেন ঋদ্ধিমান সাহা এবং ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে প্রথম একাদশে আসা সাই সুদর্শন। ওপেনার ঋদ্ধি করলেন ২৫ বলে ৩৯ রান। বাংলার প্রাক্তন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মারলেন ৫টি চার এবং ১টি ছয়। সুদর্শনের ব্যাট থেকে এল ৩৯ বলে ৬৫ রানের ইনিংস। ৭টি চার এবং ২টি ছয় মারলেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে ঋদ্ধিমান-সুদর্শন যোগ করলেন ৮২ রান। গুজরাতের অন্য ব্যাটারেরা রান না পাওয়ায় কিছুটা চাপ তৈরি হয়। এত দিন চেনা ফর্মে না থাকা ডেভিড মিলার দিল্লীর ২২ গজে রানে ফিরলেন। প্রোটিয়া ব্যাটার ৫৫ রান করলেন ২৩ বল খেলে। ৬টি চার এবং ৩টি ছক্কা মারলেন তিনি। তাঁর সামনে দিল্লীর সব বোলারকেই কার্যত অসহায় দেখাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি আউট হলেন বাংলার মুকেশ কুমারের বলে। শেষ দিকে লড়াই করলেন সাই কিশোর এবং রশিদ খান। কিশোর করলেন ৬ বলে ১৩। মারলেন ২টি ছয়। রশিদ অপরাজিত থাকলেন ১১ বলে ২১ রান করে। দিল্লীর বোলারদের মধ্যে মুকেশ ছাড়াও ভাল বল করলেন অক্ষর, রাসিখ সালাম, কুলদীপ যাদব। কুলদীপ ২৯ রানে ২ উইকেট নিলেন। অক্ষরের ২৮ রানে ১ উইকেট। রাসিখের ৪৪ রানে ৩ উইকেট। অনরিখ নোখিয়া ১ উইকেট নিলেন ৪৮ রান খরচ করে। মুকেশ ১ উইকেট নিলেন ৪১ রান খরচ করে। ম্যাচের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ঋষভ পন্থকেই।