অতিসম্প্রতিই কলকাতা পুলিশের জালে ধরা পড়েছে মুম্বই হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলির সহযোগী রাজারাম রেগে। এবিষয়ে পুলিশি তদন্তে জানা যাচ্ছে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে, মেসেজ পাঠিয়ে দেখা করতে চেয়েছিল রেগে। যদিও অভিষেকের তরফে কোনও উত্তর মেলেনি। তাঁর পিএকেও ফোন করা হয়। লালবাজার তরফে জানা যাচ্ছে, রাজারামের মোবাইল ঘেঁটে এই তথ্য মিলেছে। লালবাজারের তদন্তে উঠে এসেছে, রেগের সঙ্গে সাক্ষাতে অভিষেক রাজি হলেই, এক সঙ্গীকে নিয়ে সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল রাজারামের। সঙ্গীটি কে, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। নির্বাচনী জনসভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিষেককে খুন করার চক্রান্ত করা হয়েছিল। ধরা পড়ে গিয়েছে। অভিষেক দেখা করার সময় দিলে গুলি করে ওকে মেরে পালিয়ে যেত।” কলকাতায় যে পাঁচজনের সঙ্গে দেখা করেছিল রাজারাম, তাঁদের চিহ্নিত করেছে এসটিএফ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে। কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে কি না, তাও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে তদন্তকারীদের দল।
পাশাপাশি, একজন অভিষেকের বাড়ির রেকি পর্বে রাজারামের সঙ্গ দিয়েছিল বলেও উঠে এসেছে লালবাজারের তদন্তে। যে অ্যাপ ক্যাব ভাড়া করে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে নিউ মার্কেট এলাকার হোটেলে গিয়েছিলেন রাজারাম, তাকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। চালকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। আরও বিশদ তদন্তে মুম্বই যাচ্ছে কলকাতা পুলিশের টিম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ও অফিসে রেকি করার ঘটনায় অভিযুক্ত রাজারামের ২২ তারিখ পর্যন্ত হোটেল বুকিং ছিল। ২০ তারিখ সে তড়িঘড়ি কলকাতা ছাড়ে। কেন নির্ধারিত দিনের আগেই কলকাতা ছাড়ল সে, তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। তার ফোন থেকে বেশকিছু অ্যাপের সন্ধান মিলেছে। কথাবার্তার পাশাপাশি তথ্য আদানপ্রদান চলত বলেও জেনেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। নাশকতার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনগুলি এমন অ্যাপগুলি ব্যবহার করে। পাশাপাশি ইন্টারনেট প্রোটোকল ডিটেইলস রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে কী কী কাজ করেছে অভিযুক্ত, তার তথ্য নেওয়া হচ্ছে। অভিষেকের বাড়ি ও অফিসের ছবি অভিযুক্ত ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোথাও পাঠিয়েছিল কিনা, তা জানার চেষ্টায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।